২২ শিশুর মৃত্যুর পর কাফ সিরাপ কাণ্ডে পিএমএলএ তদন্ত! ইডি-র বিরাট হানায় নামজাদা ড্রাগ অফিসারদের বাড়িতে তল্লাশি

‘বিষাক্ত’ কোল্ডরিফ কাফ সিরাপ সেবনে ২২ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এবার আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত শুরু করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন (PMLA)-এর আওতায় সোমবার দক্ষিণ ভারতের একাধিক স্থানে জোরদার তল্লাশি অভিযান চালাল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল কোল্ডরিফ সিরাপ প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘স্রেসান ফার্মা’র অফিস এবং তামিলনাড়ুর সিনিয়র ড্রাগ কন্ট্রোল অফিসারদের বাড়ি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা কোম্পানির আর্থিক লেনদেন, অর্থ পাচার ও সম্ভাব্য দুর্নীতির নথি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।

জানা গিয়েছে, চেন্নাই-ভিত্তিক স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানায় তৈরি হয়েছিল এই প্রাণঘাতী সিরাপ, যার মালিক ৭৩ বছর বয়সি জি. রঙ্গনাথনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহে মধ্যপ্রদেশে এই সিরাপ খেয়ে অন্তত ২২টি শিশুর মৃত্যু হয়। বেশিরভাগ শিশুই সামান্য কাশি বা জ্বরের জন্য এই ওষুধ সেবন করেছিল।

পরে পরীক্ষার পর জানা যায়, সিরাপে ছিল মারাত্মক রাসায়নিক ‘ডাইইথিলিন গ্লাইকোল’। এই রাসায়নিক মূলত অ্যান্টিফ্রিজ তৈরিতে ব্যবহার করা হয় এবং এটি মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। এই বিষক্রিয়ার কারণেই শিশুদের কিডনি বিকল হয়ে যায় এবং একের পর এক শিশুর মৃত্যু ঘটে।

লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও মান নিয়ন্ত্রণের চরম গাফিলতি:
কেন্দ্রীয় ওষুধ মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (CDSCO)-এর তদন্তে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। সিডিএসসিও জানতে পারে, স্রেসান ফার্মা এবং তামিলনাড়ু ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (TNFDA)-এর মধ্যে একাধিক গাফিলতি ও অনিয়ম ছিল। ২০১১ সালে লাইসেন্স পাওয়ার পরও সংস্থাটির কারখানায় পরিকাঠামো ও মান নিয়ন্ত্রণের চরম অভাব ছিল। অভিযোগ, এমন গুরুতর ত্রুটি থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে কোনও বাধা ছাড়াই উৎপাদন কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল সংস্থাটি।

এই ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। একাধিক রাজ্য ইতিমধ্যেই এই প্রাণঘাতী সিরাপটি নিষিদ্ধ করেছে। কীভাবে একটি নিকৃষ্ট মানের ওষুধ বাজারে এল এবং এই মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনায় আর কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখছে ইডি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy