পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক একটি ফল হলো আপেল। একটি জনপ্রিয় প্রবাদও আছে, “প্রতিদিন একটি আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন।” তবে আপেল স্বাস্থ্যের জন্য যতটা উপকারী, এর বীজ ততটাই বিষাক্ত হতে পারে।
আসুন, জেনে নেওয়া যাক আপেলের বীজ ঠিক কতটা বিপজ্জনক-
আপেলের বীজে খুব সামান্য পরিমাণে সায়ানাইড থাকে, যা একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বিষ হিসেবে পরিচিত। তবে, বীজের বাইরের শক্ত খোসা থাকার কারণে সাধারণত এই বিষ থেকে আমাদের শরীর রক্ষা পায়। তাই আপেলের বীজ গিলে ফেললে হজম না হওয়ার দরুন তেমন কোনো ভয়ের কারণ থাকে না। কিন্তু যদি আপেলের বীজ কামড়ে বা চিবিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে বীজের ভেতরে থাকা রাসায়নিক শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তবে আশার কথা হলো, একটি আপেলের বীজে টক্সিনের মাত্রা এত কম থাকে যে আমাদের শরীর সহজেই তা নিষ্ক্রিয় (ডিটক্সিফাই) করতে পারে।
কী পরিমাণে আপেল বীজ প্রাণঘাতী হতে পারে?
গবেষণা অনুযায়ী, প্রতি কিলোগ্রাম শরীরের ওজনের জন্য প্রায় ১ মিলিগ্রাম সায়ানাইড মারাত্মক বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। আপেলের একটি বীজে গড়ে ০.৪৯ মিলিগ্রাম সায়ানোজেনিক যৌগ থাকে। স্বাভাবিকভাবে একটি আপেলে বীজের সংখ্যা একই থাকে না। যদি একটি আপেলে গড়ে ৮টি বীজ থাকে, তাহলে তাতে প্রায় ৩.৯২ মিলিগ্রাম সায়ানাইড থাকতে পারে। সেই হিসেবে, ৭০ কেজি ওজনের কোনো ব্যক্তিকে নিশ্চিত মৃত্যুর জন্য কমপক্ষে ১৪৩টি আপেলের বীজ চিবিয়ে খেতে হবে। এর জন্য প্রায় ১৮টি আপেলের প্রয়োজন হবে।
তবে শিশুদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা অনেক বেশি। শিশুরা যদি অসাবধানতাবশত একসঙ্গে চার-পাঁচটি আপেলের বীজও চিবিয়ে খায়, তবে তা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। শিশুদের ওজন কম হওয়ার কারণে সায়ানাইডের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। সেজন্য শিশুদের আপেল খাওয়ানোর আগে অবশ্যই বীজ ফেলে দেওয়া উচিত।