প্রতিমা নিরঞ্জনে এক একদম অন্যরকম এবং চমকপ্রদ ঘটনার সাক্ষী থাকল পাহাড়বাসী। এবার বিসর্জনের শোভাযাত্রা রাস্তায় নয়, চলল রেলের ট্র্যাকের উপর দিয়ে! দার্জিলিংয়ে টয়ট্রেনে চেপে পাহাড়ের প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পরিক্রমা করে কৈলাসে ফিরলেন দেবী দুর্গা।
ঐতিহ্যবাহী নৃপেন্দ্রনারায়ণ বাঙালি হিন্দু হলের পুজোর প্রতিমাকে টয়ট্রেনে করে গোটা পাহাড় ঘুরিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়। এবার এই পুজো ১১১তম বর্ষে পদার্পণ করল।
ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্য ফিরে এল:
ব্রিটিশ আমলে পাহাড়ে দুর্গাপুজো ছিল হাতে গোনা। রাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণই এই পুজোর প্রচলন শুরু করেন। সেই সময়ে শিলিগুড়ির কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা টয়ট্রেনে করেই শৈলরানিতে নিয়ে যাওয়া হতো, কারণ পাহাড়ি রাস্তায় তখন যান চলাচলের ব্যবস্থা ছিল না।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় ট্রাক বা পালকিতে প্রতিমা আনা-নেওয়া হলেও, এবার সেই প্রাচীন ঐতিহ্যের এক নতুন রূপ দেখল পাহাড়। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ঢাকের তালে টয়ট্রেন করে মা দুর্গাকে গোটা পাহাড় ঘুরিয়ে বিসর্জন দেওয়া হয়।
রেলের কামরায় শোভাযাত্রা:
পুজোর বিসর্জনকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পুজো কমিটির দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় দার্জিলিং হিমালয়ান রেল কর্তৃপক্ষ (DHR)।
দার্জিলিং স্টেশন থেকে দেবী দুর্গাকে টয়ট্রেনে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ১২ কিলোমিটার দূরে রংবুলে।
পথটি ছিল ঘুম, বাতাসিয়া লুপ হয়ে।
বিসর্জনের জন্য টয়ট্রেনের তিনটি কামরা ব্যবহার করা হয়— একটিতে দেবী দুর্গার প্রতিমা, এবং অন্য দুটি কামরায় ছিলেন উদ্যোক্তারা।
টয়ট্রেনে বিসর্জনের এই চমকপ্রদ শোভাযাত্রা নজর কাড়ল আট থেকে আশির। পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরাও তাড়িয়ে তাড়িয়ে এই অনন্য পরিক্রমা উপভোগ করলেন।