সীমান্ত পার থেকে রাষ্ট্র-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না করলে পাকিস্তান তাদের ভৌগোলিক অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলবে। রাজস্থানের অনুপগড়ের সেনাঘাঁটিতে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পাকিস্তানকে এই চরম সতর্কবার্তা দিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তাঁর এই কড়া মন্তব্যে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনা বহুগুণ বাড়ল বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।
সেনাপ্রধানের মুখে ‘অপারেশন সিন্দুর’
জেনারেল দ্বিবেদী পাকিস্তানকে স্পষ্ট জানিয়েছেন, যদি ইসলামাবাদ সন্ত্রাস রফতানি বন্ধ না করে, তবে ভারত এবার আর কোনো সংযম দেখাবে না। তিনি ইঙ্গিত দেন, ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর দ্বিতীয় সংস্করণ খুব বেশি দূরে থাকবে না।
সেনাপ্রধান বলেন, “পাকিস্তান যদি মানচিত্রে তাদের জায়গা ধরে রাখতে চায়, তাহলে রাষ্ট্রপোষিত সন্ত্রাসবাদ তাদের থামাতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এবার আমরা অপারেশন সিঁদুর ১.০-তে যে সংযম বজায় রেখেছিলাম তা আর বজায় রাখব না। এবার আমরা এমন কিছু করব যা পাকিস্তানকে ভাবতে বাধ্য করবে যে তারা ভূগোলে তার স্থান ধরে রাখতে চায় কিনা।”
তিনি জওয়ানদের প্রস্তুত থাকতে বলে আশ্বস্ত করেন, “ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে, আপনারা শীঘ্রই একটা সুযোগ পাবেন। শুভকামনা রইল।”
এফ-১৬ সহ পাক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল
জেনারেল দ্বিবেদীর এই কঠোর বার্তার ঠিক আগে এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং মন্তব্য করেছিলেন যে, ভারতীয় বাহিনী মে মাসে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চলাকালীন আমেরিকার তৈরি এফ-১৬ এবং চিনা জেএফ-১৭ সহ চার থেকে পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান ভূপতিত করেছে।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার উপযুক্ত জবাব দিতেই ভারত এই সামরিক অভিযান পরিচালনা করে। ওই অপারেশনে ৭ মে ভারতীয় বাহিনী দূরপাল্লার নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। এরপরই আতঙ্কিত পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে আসতে বাধ্য হয়।
কড়া হুঁশিয়ারি প্রতিরক্ষামন্ত্রীরও
সেনাপ্রধানের এই সতর্কবার্তার ঠিক আগের দিনই পাকিস্তানকে চরম সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
তিনি অভিযোগ করেন, পাকিস্তান ইচ্ছাকৃতভাবে Sir Creek এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী সীমান্ত বিরোধকে উস্কাচ্ছে এবং সেখানে সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট সতর্ক করে বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র কোনও দুঃসাহসিক কাজ করতে গেলে এমন জবাব দেওয়া হবে যে “ইতিহাস-ভূগোল দুই-ই বদলে যাবে।”
তাঁর বক্তব্য, “ভারত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছে, কিন্তু পাকিস্তানের উদ্দেশ্যের মধ্যে ত্রুটি রয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তান সেনাবাহিনী Sir Creek সংলগ্ন এলাকায় যেভাবে সামরিক পরিকাঠামো সম্প্রসারণ করেছে, তাতে তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে।”