উৎসবের আবহেও থামছে না রাজনীতি, ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু তৃণমূলের!

দুর্গাপুজো শেষ হতেই রাজনৈতিক লড়াইয়ের ময়দানে নামার প্রস্তুতি শুরু করে দিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে, ৫ অক্টোবর থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি ‘বিজয়া সম্মিলনী’।

দলীয় সূত্রে খবর, এই জনসংযোগ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনমত যাচাই করা, সরকারের কাজের বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং বিরোধীদের মোকাবিলার মতো রাজনৈতিক কৌশল বাস্তবায়ন করাই মূল উদ্দেশ্য।

বিরোধীদের শক্ত ঘাঁটিতে বিশেষ নজর
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব কালীঘাট থেকে জেলার নেতাদের কড়া নির্দেশ দিয়েছেন— প্রতিটি ব্লকে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করতে হবে। এই কর্মসূচি আয়োজনের ক্ষেত্রে বিরোধী শক্ত ঘাঁটিগুলিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

জনমত যাচাই: এই এলাকাগুলিতে জনমতের হাল বোঝা এবং ভোটারদের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করাই এখন দলের প্রধান লক্ষ্য।

বক্তাদের ভিড়: প্রতিটি ব্লকে আয়োজিত এই সম্মিলনীতে প্রায় ৫০ জনেরও বেশি বক্তা অংশ নেবেন।

দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজয়া সম্মিলনীর মাধ্যমে আমরা আবারও মানুষের দরজায় পৌঁছব। রাজ্য সরকারের সাফল্যের কথা মনে করিয়ে দেওয়া, মানুষের সমস্যার কথা শোনা এবং বিরোধীদের কুৎসার জবাব দেওয়াই আমাদের উদ্দেশ্য।”

মঞ্চ থেকে কড়া বার্তা: কেন্দ্রের বকেয়া ও রাজ্যের সাফল্য
বিজয়া সম্মিলনীর এই রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা তুলে ধরা হবে:

কেন্দ্রের বঞ্চনা: কেন্দ্র সরকারের বকেয়া অর্থ না মেলার অভিযোগ এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার কথা তুলে ধরা হবে।

রাজ্যের সাফল্য: রাজ্য সরকারের সফল কর্মসূচিগুলি জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে।

পাল্টা যুক্তি: জনগণকে বোঝানো হবে, বাম আমলে রাজ্যের কী অবস্থা ছিল এবং বর্তমানে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে কী পরিস্থিতি।

রাজনৈতিক মহলের মতে, এই কর্মসূচি তৃণমূলের জন্য কর্মীদের উজ্জীবিত করার পাশাপাশি জনমত যাচাইয়ের একটি বড় সুযোগ এনে দেবে। প্রতিটি সম্মিলনীর শেষে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী বিধানসভার রূপরেখা ঠিক করা হবে। যদি কোথাও জনসমর্থনে ভাটা পড়ে, তবে সেই কারণ বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সব মিলিয়ে, ‘বিজয়া সম্মিলনী’ শুধুমাত্র উৎসব-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় নয়, এটি ২০২৬-এর ভোট যুদ্ধে নামার আগের প্রথম বড় রাজনৈতিক পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy