ভূরাজনৈতিক সংঘাত, শুল্ক এবং বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞাগুলির কারণে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইন যখন নতুনভাবে রূপান্তরিত হচ্ছে, তখন ভারত কোনোভাবেই নিস্ক্রিয় দর্শক থাকতে পারে না। শুক্রবার দিল্লিতে কৌটিল্য ইকোনমিক কনক্লেভ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে একথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman)।
বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অবস্থান
সীতারামন বলেন, বর্তমানে বিশ্বে যে ভূরাজনৈতিক সংঘাত ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে, তাতে ভারতকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, বিশ্ব বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে ভারতের জন্য তার স্থান পাকা করা অপরিহার্য।
চ্যালেঞ্জ ও সক্ষমতা: অর্থমন্ত্রী বলেন, “আজকের দিনে যা কিছু ঘটছে, তা আমাদের সবার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, বিশেষত ভারতের জন্য। আমাদের দেশের ভিতর নানা ধরনের সমস্যা এবং সঙ্কট আসতে পারে, কিন্তু ভারতের সক্ষমতা আছে সে সব শোক শোষণ করার।”
বাণিজ্যের নতুন দিক: ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং অর্থনৈতিক শিফটগুলির কারণে দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কের নতুন পথ তৈরি হচ্ছে। সীতারামন বলেন, এই পরিবর্তনগুলির প্রভাব শুধুমাত্র বৃহত্তম দেশগুলোর ওপরই নয়, ছোট ও মাঝারি আয়ের দেশগুলোর ওপরও গভীর প্রভাব ফেলছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে ভারতের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি
সীতারামন মনে করেন, বিশ্ব বাণিজ্য এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে কোনো দেশ আর এককভাবে কাজ করতে পারছে না, বরং একে অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে চলছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারত তার ভূমিকা বুঝতে পেরেছে।
নতুন কৌশল: তিনি বলেন, “ভারত তার অবস্থান বুঝতে পেরেছে এবং সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আমাদের দেশে এখন বাণিজ্য নীতি, উৎপাদন কৌশল এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন।”
শক্তিশালী ভিত্তি: ভারত গত কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক চাপের মধ্যেও তার শক্তি প্রদর্শন করেছে। সীতারামন বলেন, দেশের অভ্যন্তরে যে ধরনের উন্নতি হয়েছে এবং ভারত যেভাবে তার বাজার ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করেছে, তা আমাদের ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ভারত এখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক আলোচনায় শুধু অংশগ্রহণকারী নয়, বরং একটি সক্রিয় এবং প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর।