মদের পর এবার ‘সোশ্যাল মিডিয়া নেশা’! পুলিশের নজরদারির নির্দেশ মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের, ভাইরাল হতে পারে রায়

মদের নেশার পাশাপাশি এবার সোশ্যাল মিডিয়া “নেশা” (Social Media “Intoxication”) নিয়ে পুলিশ কর্মীদের সতর্ক করল মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। আদালত পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে যে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তায়, আদালতে বা আইন-শৃঙ্খলার ডিউটিতে থাকা পুলিশদের মধ্যে মোবাইল ফোনে মগ্ন থাকার প্রবণতা মারাত্মকভাবে বাড়ছে।

বিচারপতি আনন্দ পাঠক এবং বিচারপতি পুস্পেন্দ্র যাদবের ডিভিশন বেঞ্চ একজন পুলিশ কর্মীর বাধ্যতামূলক অবসরের বিরুদ্ধে করা আপিল মামলার শুনানি করছিল, যাকে ডিউটিরত অবস্থায় মদ্যপ অবস্থায় ঘুমিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল।

হাইকোর্টের কড়া রায়:
আদালত রায় দেয় যে পুলিশ কর্মীকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্তটি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং তার আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালত যুক্তি দেয়, “আবেদনকারী একজন ভিভিআইপি-র বাসভবনে গার্ড ডিউটিতে ছিলেন, তাই তাঁকে আরও সতর্ক থাকতে হত। এই ধরনের মদ্যপ অবস্থা শৃঙ্খলা নষ্ট করতে পারে এবং যার নিরাপত্তার জন্য তাকে রাখা হয়েছে, তারই বিপদের কারণ হতে পারে।”

‘মোবাইল অ্যাডিকশন’ গুরুতর সমস্যা:
আদালত মদ্যপানের পাশাপাশি নিরাপত্তা কর্মীদের মধ্যে মোবাইল ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক ব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং তা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার আহ্বান জানায়। বেঞ্চ বলে, “এই আদালত ইউনিফর্ম পরা বিভাগগুলিতে (যেমন পুলিশ) প্রচলিত অন্য একটি নেশার প্রতি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে, আর সেই নেশা হল মোবাইল/সোশ্যাল মিডিয়া।”

হাইকোর্ট স্পষ্ট করে যে গার্ড ডিউটি, আদালত ডিউটি বা অন্যান্য ক্ষেত্রে যেখানে পুলিশ কর্মীদের অপেক্ষাকৃত কম পরিশ্রমের কাজ করতে হয়, সেখানে তারা প্রায়শই মোবাইল এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে মগ্ন থাকেন। এর ফলে “শৃঙ্খলাহীনতা, কর্তব্যে উদাসীনতা এবং কখনও কখনও আপত্তিকর সোশ্যাল মিডিয়া ক্লিপ” পুলিশের মনকে কলুষিত করে এবং তাদের মেজাজকে প্রভাবিত করে।

নজরদারি ও প্রশিক্ষণের নির্দেশ:
হাইকোর্ট এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংবেদনশীলতা (Sensitization) কর্মসূচির আয়োজন করার পরামর্শ দেয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, পুলিশ কর্মীদের ওপর এবং ডিউটিতে থাকাকালীন তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থিতির ওপর নিরন্তর নজরদারি রাখার জন্য একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে বলা হয়। হাইকোর্ট এই আদেশের কপি ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (প্রশাসন) এবং অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ (প্রশিক্ষণ)-এর কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy