বিরল খনিজ পদার্থ দেখিয়ে ট্রাম্পকে উপহার! পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে ‘দোকানদার’ বলে উপহাস করলেন সেনেটর!

নিজের দেশেই তীব্র সমালোচনা ও কটাক্ষের মুখে পড়লেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তিনি বিরল খনিজ পদার্থ উপহার হিসেবে দেখিয়েছেন, যা নিয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির এক প্রভাবশালী সেনেটর এই ঘটনার পর ফিল্ড মার্শালের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং প্রকাশ্যে তাঁকে উপহাস করেছেন।

সেনেটর আইমাল ওয়ালি খান মুনিরের এই কার্যকলাপকে একজন ‘দোকানদারের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন, যিনি একজন গ্রাহককে দামি জিনিসপত্র দেখাচ্ছেন।

ভাইরাল ভিডিওতে কড়া সমালোচনা
সংসদে বক্তব্য রাখার সময় সেনেটর খান বলেন, “বিরল খনিজ পদার্থ সম্বলিত একটি ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আমাদের চিফ অফ আর্মি স্টাফ। কী রসিকতা! এটা ছিল সম্পূর্ণ উপহাস।” তাঁর সেই বক্তব্যের একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

এই ঘটনাটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কূটনীতিতে সেনাবাহিনীর ক্রমশ জড়িয়ে পড়া নিয়ে যে ক্রমবর্ধমান অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, তারই ইঙ্গিত দেয়।

হোয়াইট হাউসের ছবি ও রুদ্ধদ্বার বৈঠক
এই সপ্তাহের শুরুতে হোয়াইট হাউস একটি ছবি প্রকাশ করে। সেই ছবিতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মুনিরের উপহার দেওয়া বিরল মাটির খনিজ পদার্থ সম্বলিত একটি কাঠের বাক্স গভীরভাবে পরীক্ষা করছেন, আর পাশে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দাঁড়িয়ে আছেন।

এই ঘটনাটি ঘটে এমন এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সময়, যখন পাকিস্তানি সামরিক ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা ফ্রন্টিয়ার ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন (FWO) এবং মার্কিন সংস্থা স্ট্র্যাটেজিক মেটালস পাকিস্তানে প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তিতে ব্যবহারের জন্য কৌশলগত খনিজ অনুসন্ধানের একটি সমঝোতা স্মারক সই করছে।

হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানি নেতাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পরই এই ছবি তোলার ঘটনা ঘটে। এটি ছিল পাঁচ মাসের মধ্যে মুনিরের তৃতীয় মার্কিন সফর, যা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সামরিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে।

‘দোকানদার’ মন্তব্যের কারণ
সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে তাঁর তীব্র সমালোচনা অব্যাহত রেখে সেনেটর খান বর্তমান সময়ের দৃষ্টিভঙ্গিকে উপহাস করেছেন। তিনি বলেন, “কোন সেনাপ্রধান বিরল মাটির খনিজ পদার্থ ভর্তি ব্রিফকেস নিয়ে ঘুরে বেড়ান? এটি দেখতে একটি বড়, ব্র্যান্ডেড দোকানের মতো লাগছিল – যেখানে একজন ম্যানেজার খুশি মনে তাকিয়ে ছিলেন যখন একজন দোকানদার একজন গ্রাহককে তাঁর কাছ থেকে একটি বড়, চকচকে জিনিস কিনতে বলছেন।”

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের পর এই ২০২৫ সালেই কোনও পাক রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প সম্প্রতি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও পাক সেনাপ্রধানের প্রশংসা করেছেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy