চেন্নাইয়ের পোরুর এলাকায় অনুমতি ছাড়া একটি সরকারি স্কুলে ‘গুরু পূজা’ ও বিশেষ প্রশিক্ষণ সেশন আয়োজন করার অভিযোগে অন্তত ৩৯ জন আরএসএস কর্মীকে (RSS Workers) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এই গণ-গ্রেপ্তার ঘিরে তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই (ANI) জানিয়েছে, আয়াপ্পান্থাঙ্গাল সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পূর্ব অনুমতি ছাড়াই অনুষ্ঠানটি চলছিল। এর ফলেই পুলিশ আইনি পদক্ষেপ নিয়ে তাঁদের আটক করে।
‘মাফিয়ারা ছাড়া, আরএসএস কর্মীরা গ্রেপ্তার’: বিজেপি-এর ক্ষোভ
এই গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা করেছেন বিজেপি নেত্রী তামিলিসাই সৌন্দররাজন। তিনি সরাসরি ক্ষমতাসীন ডিএমকে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন।
তামিলিসাই সৌন্দররাজন বলেন, “প্রায় ৫০-৬০ জন কর্মী একটি মাঠে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা পালন করছিলেন। হঠাৎ করেই তাঁদের আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে, তামিলনাড়ুতে মাফিয়া ও অন্যান্য অপরাধী কার্যক্রম অবাধে চলছে, কিন্তু আরএসএস কর্মীরা গ্রেপ্তার হলেন।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ডিএমকে সরকার তামিলনাড়ুতে সামাজিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী উপাদানকে উত্সাহ দিচ্ছে। তারা এইসব কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। কিন্তু আরএসএসের মার্চ বা অনুষ্ঠান দেখলেই পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
শতবর্ষ উদযাপন ও মোদির ১০০ টাকার মুদ্রা
উল্লেখ্য, আগামী বছর ২০২৫ সালের ১ অক্টোবর আরএসএস তার প্রতিষ্ঠার ১০০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন করতে চলেছে। এই উপলক্ষে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১০০ টাকার স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেছেন। মুদ্রায় স্বয়ংসেবকদের সংগের পোশাকে ভারত মাতার প্রতি নতজানু হওয়ার দৃশ্য রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই মুহূর্তটিকে “একটি গৌরবময় ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত” বলে উল্লেখ করেছেন।
আরএসএস-এর শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবেই দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজা, শাখা প্রশিক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। চেন্নাইয়ের এই ঘটনা প্রমাণ করল যে, এই ধরনের সাংগঠনিক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় কতটা জরুরি।
গ্রেপ্তারের সময় কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি বলে স্থানীয় সূত্র জানালেও, বিজেপি এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবেই দেখছে। এই ঘটনা রাজনীতি, সামাজিক অনুষ্ঠান এবং প্রশাসনের মধ্যেকার ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।