আজ ২ অক্টোবর। জাতির জনক মহাত্মা গান্ধির ১৫৬তম জন্মবার্ষিকী। সারা দেশজুড়ে আজ উদযাপিত হচ্ছে গান্ধী জয়ন্তী। শুধুমাত্র জাতীয় ছুটি হিসেবেই নয়, রাষ্ট্রসংঘ এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়ায়, আজকের দিনটি বিশ্বব্যাপী শান্তি ও অহিংসার প্রতীক হিসেবে পালিত হচ্ছে।
বর্তমানে যখন বৈষম্য, হিংসা ও আন্তর্জাতিক সংঘাত বিশ্বকে অশান্ত করছে, তখন গান্ধিজির সত্য ও অহিংসার দর্শন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তাঁর জীবনের মূল সংগ্রাম ছিল সামাজিক সমতা, অস্পৃশ্যতা দূরীকরণ, নারী-পুরুষের সমান অধিকার এবং গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধাঞ্জলি
গান্ধিজির জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ নেতারা:
রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সকল নাগরিককে ‘পরিষ্কার, আরও সক্ষম, স্বনির্ভর এবং সমৃদ্ধ ভারত’ গড়ে তোলার মাধ্যমে গান্ধিজির স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সংকল্পবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গান্ধিজি তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন অস্পৃশ্যতা, নিরক্ষরতা এবং অন্যান্য সামাজিক কুফল নির্মূল করতে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধির সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিনি লেখেন, “প্রিয় বাপুর অসাধারণ জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন” করে ভারত ‘আত্মনির্ভর’ এবং ‘বিকশিত ভারত’-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য তাঁর দেখানো পথে চলবে। তিনি বাপুর আদর্শকে “মহান পরিবর্তনের হাতিয়ার” বলে বর্ণনা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী ও অভিষেকের বার্তা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় গান্ধিজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, “তাঁর অহিংসার বাণী, শান্তির বাণী, একতার বাণী, সম্প্রীতির বাণী চিরস্মরণীয়।” তিনি গান্ধিজির প্রিয় প্রার্থনা, ‘ঈশ্বর আল্লাহ তেরো নাম, সবকো সন্মতি দে ভগবান’-এর কথা আজকের দিনে বিশেষভাবে স্মরণ করতে অনুরোধ করেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও গান্ধিজিকে স্মরণ করে বলেন, তাঁর “অহিংসা, সত্য এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির স্থায়ী নীতিগুলি বিশ্বজুড়ে ব্যক্তি এবং জাতির জন্য অনুপ্রেরণার এক গভীর উৎস” হিসেবে রয়ে গিয়েছে।
আজ লাল বাহাদুর শাস্ত্রীরও জন্মবার্ষিকী
মহাত্মা গান্ধির জন্মবার্ষিকীর পাশাপাশি, আজ দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীরও জন্মবার্ষিকী। তাঁকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদি শাস্ত্রীজিকে ‘অসাধারণ রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে বর্ণনা করে লিখেছেন, তাঁর সততা, নম্রতা এবং দৃঢ় সংকল্প ভারতকে শক্তিশালী করেছিল। মোদি আরও লেখেন, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’-এর তাঁর উচ্চস্বরের ডাক আমাদের জনগণের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা জাগিয়ে তুলেছিল।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আজ প্রার্থনা সভা, শোভাযাত্রা ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গান্ধিজির বার্তা নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করছে শান্তি, সাম্য ও সহনশীলতার পথে চলার জন্য।