আজ, বৃহস্পতিবার, যখন দেশজুড়ে অশুভ শক্তির বিনাশের প্রতীক হিসেবে রাবণের মূর্তি পোড়ানো হচ্ছে, তখন সম্পূর্ণ অন্য চিত্র উত্তরপ্রদেশের নয়ডার বিসরাখ গ্রামে। এই গ্রামের বাসিন্দারা রাবণকে পূজা করেন এবং তাঁর মূর্তি পোড়ান না। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন লঙ্কার অধিপতি রাবণ।
রাবণের নামে গ্রামের নাম, জ্ঞানের প্রতীক দশানন:
স্থানীয়দের মতে, বিসরাখ গ্রামের নাম এসেছে রাবণের বাবা ঋষি বিশ্বশ্রবার নাম থেকে। এই গ্রামের মানুষ রাবণকে ‘বিসরাখ গ্রামের পুত্র’ বলে মনে করেন। রাবণকে তাঁরা শিবের উপাসক এবং জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে সম্মান করেন।
ওই গ্রামের রাবণ মন্দিরের পুরোহিত রামদাস মহারাজ বলেন, “এই গ্রামে শুধু রাবণ নন, তাঁর ভাই কুম্ভকর্ণ, বিভীষণ এবং বোন শূর্পণখা-ও জন্মগ্রহণ করেছিলেন।” তাঁর দাবি, রাবণ জন্মেছিলেন এক মাথা নিয়েই, কিন্তু মন্দিরে শিবের সামনে তিনি দশবার নিজের মাথা কেটেছিলেন। শিবের বরে তিনি দশটি মাথা ফিরে পান এবং তাঁর নাম হয় দশানন। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই গ্রামেই ছিল ঋষি পুলস্ত্যর আশ্রম।
রামলীলায় অংশ নিলে অমঙ্গল!
এই কারণেই বিসরাখ গ্রামের বাসিন্দারা অন্য জায়গার মতো রামলীলা বা রাবণের কুশপুতুল পোড়ানোর অনুষ্ঠানে যোগ দেন না। মন্দিরের মহান্ত রামদাস মহারাজ বলেন, “দশেরার দিন বিসরাখ গ্রামের বাসিন্দারা রান্নার উৎসব করেন। আমরা অস্ত্র পূজার পাশাপাশি ক্ষীর এবং লুচি তৈরি করি। রাবণের মৃত্যুর জন্য আমরা শোক পালন করি, কিন্তু তাঁর মূর্তি বা কুশপুতুল পোড়াই না।”
গ্রামের মানুষের বিশ্বাস, এই গ্রামে কেউ রামলীলায় অংশ নিলে বা রাবণের কুশপুতুল পোড়ালে ফল খারাপ হয়। এর আগে একজন রামলীলায় অংশ নেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং একজন রাবণের কুশপুতুলে আগুন দেওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারান। সেই থেকেই এই গ্রামে এই প্রথা কঠোরভাবে মেনে চলা হয়।