সপ্তাহব্যাপী কারফিউ এবং হিংসার ছায়ায় অচল থাকার পর লাদাখের হৃদয়স্থল লেহ-তে (Leh) আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সাত ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে। প্রশাসনের অনুমতিতে এই শিথিলতা আসায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
লেহের প্রধান বাজার এলাকায় সকাল থেকেই লোকজনের ভিড় দেখা গেছে। দোকানপাট সাজিয়ে তোলার সুযোগ পাওয়ায় মানুষজন খাদ্য, পোশাক এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পেরেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের স্বস্তি
দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকার কারণে স্থানীয়দের মধ্যে যে কষ্ট ছিল, তা কিছুটা হলেও দূর হয়েছে।
এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “গত সপ্তাহ ধরে দোকান বন্ধ থাকায় আমরা কষ্ট পাচ্ছিলাম। আজ শেষে কিছু কেনাকাটা করতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য বড় উপকার।”
পর্যটকরাও এই সুযোগে বাজারে এসেছেন। একজন দিল্লি থেকে আগত পর্যটক জানান, “আমরা লাদাখের সৌন্দর্য দেখতে এসেছিলাম, কিন্তু কারফিউয়ে আটকে পড়েছিলাম। আজ বাজার খোলায় অন্তত কিছু কেনাকাটা করতে পারলাম। আশা করি শীঘ্রই স্বাভাবিকতা ফিরে আসবে।”
কেন অস্থিরতা লাদাখে?
লেহ-এর এই অস্থিরতা শুরু হয়েছে লেহ অ্যাপেক্স বডি (LAB)-এর একটি অংশীদার সংগঠনের ডাকা বন্ধের আহ্বানের মাধ্যমে। এই বিক্ষোভের মূল দাবি হলো লাদাখের জন্য পৃথক রাজ্য মর্যাদা এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তিকরণ।
বিক্ষোভ চলাকালীন বিক্ষোভকারীরা একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেন, যার জেরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
গ্রেফতার ও হতাহত: হিংসাতে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে পরিবেশবিদ সোনাম ওয়াংচুককে গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয় এবং ১৫০ জনেরও বেশি আহত হন।
এরপর থেকে লেহে কারফিউ জারি, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ এবং কার্গিলের মতো লাদাখের অন্যান্য অংশেও সমাবেশ নিষেধাজ্ঞা চলছে।
পর্যটন খাতে মারাত্মক প্রভাব
পর্যটন খাতে এই অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। লেহের হোটেলগুলিতে বহু পর্যটক আটকে আছেন। একজন হোটেল কর্মী বলেন, “আমরা লাদাখের পর্বতমালা এবং মঠ দেখাতে চাই, কিন্তু এখন সবাই ঘরে বন্দি। বুকিং বাতিল হচ্ছে, আমাদেরও কষ্ট হচ্ছে।”
সোনাম ওয়াংচুককে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের (NSA) অধীনে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা বিক্ষোভকারীদের আরও ক্ষুব্ধ করেছে এবং লাদাখের পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করে তুলেছে।