প্রায় দুই দশক ধরে আলোচনায় থাকার পর, এবার ভারত-ভুটান রেল যোগাযোগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এবং বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রির ঘোষণা অনুযায়ী, ভুটান সংযোগে দুটি নতুন রেললাইন তৈরি হচ্ছে, যার সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে ভারত। ভুটানের জন্য এটাই হবে প্রথম রেল যোগাযোগ।
দুটি গুরুত্বপূর্ণ রেল প্রকল্প
দুই দেশের মধ্যে দুটি প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে, যা ভুটানের ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলিকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করবে:
প্রকল্পের নাম দূরত্ব খরচ সময়সীমা বিশেষত্ব
কোকরাঝাড় (অসম)–গেলেপু (ভুটান) ৬৯ কিমি ৩,৪৫৬ কোটি টাকা ৪ বছর গেলেপু হচ্ছে ভুটানের রাজার কল্পিত ‘মাইন্ডফুলনেস সিটি’র কেন্দ্রবিন্দু।
বানারহাট (উত্তরবঙ্গ)–সামচে (ভুটান) ২০ কিমি ৫৭৭ কোটি টাকা ৩ বছর সামচে গড়ে উঠছে শিল্পনগরী হিসেবে।
মোট খরচ ৮৯ কিমি ৪,০৩৩ কোটি টাকা – –
Export to Sheets
২০১৭ সালের ডোকলাম সংঘাতের অভিজ্ঞতার পর এই করিডরের নিরাপত্তা ভারতের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ভুটান পর্যন্ত রেলপথ তৈরি হলে উত্তর-পূর্বে সেনা সরবরাহ ও জরুরি যোগাযোগ আরও সুরক্ষিত হবে।
অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব
রেলপথ চালু হলে উভয় দেশই গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা পাবে:
বাণিজ্যে সুবিধা: ভুটানের খনিজসহ নানা রপ্তানি পণ্য সরাসরি ভারতের বন্দরে পৌঁছতে পারবে এবং সময় অনেকটাই বাঁচবে।
পর্যটন বৃদ্ধি: গেলেপুর ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্প সহ ভুটানের পর্যটনে গতি আসবে।
কৌশলগত সুবিধা: সামচে থেকে মাত্র ৭০ কিমি দূরে অবস্থিত শিলিগুড়ি করিডর (যা ‘চিকেনস নেক’ নামে পরিচিত)। ভুটান পর্যন্ত রেলপথ তৈরি হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের একমাত্র স্থলপথ সংযোগ এই করিডরের নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা-কবচ হয়ে উঠবে।
এই রেল প্রকল্পের সূচনা শুধু দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করবে না, বরং কৌশলগত ও অর্থনৈতিক দুই দিকেই নতুন দিগন্ত খুলবে।