মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি শান্ত করতে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পরই গাজ়ায় শান্তি ফেরাতে এক বিরাট ২০ দফার প্রস্তাব পেশ করেছেন তিনি।
খবর অনুযায়ী, নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছেন। যদিও হামাসের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে তারা প্রস্তাবগুলি পর্যালোচনা করে দেখছে বলে জানা গেছে।
মূল প্রস্তাব: গাজ়াকে সন্ত্রাসমুক্ত করার রোডম্যাপ
হোয়াইট হাউসের তরফে পেশ করা এই ২০ দফার মূল লক্ষ্য হলো গাজ়াকে মৌলবাদ মুক্ত ও সন্ত্রাসমুক্ত করে পুনরোন্নয়ন করা, যাতে গাজ়াবাসীই লাভবান হতে পারেন। এই প্রস্তাবের কয়েকটি প্রধান দিক হলো:
যুদ্ধবিরতি ও সেনা প্রত্যাহার: দুই পক্ষ রাজি হলে সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ থেমে যাবে। ইজরায়েলি সেনাকে গাজ়া থেকে সরে যেতে হবে এবং সমস্ত সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
বন্দি বিনিময় (৭২ ঘণ্টা): ইজরায়েল প্রস্তাব গ্রহণ করলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত বন্দি (জীবিত বা মৃত) ফেরাতে হবে হামাসকে। এর বিনিময়ে ইজরায়েল যাবজ্জীবনের সাজাপ্রাপ্ত ২৫০ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে।
হামাস সদস্যদের ক্ষমা: যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সম্মত হয়ে অস্ত্র ত্যাগ করবেন এবং গাজ়া ছাড়তে চাইবেন, হামাসের সেই সব সদস্যদের ক্ষমা করে দেওয়া হবে এবং তাঁদের জন্য নিরাপদ করিডর তৈরি করা হবে।
গাজ়ার পুনর্গঠন ও শাসন কাঠামোয় পরিবর্তন
প্রস্তাবে গাজ়ার ভবিষ্যতের শাসন কাঠামো এবং ব্যাপক অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে:
নতুন শাসনভার: গাজ়ার শাসনকার্য সাময়িকভাবে পরিচালনা করবে একটি টেকনোক্র্যাটিক, অরাজনৈতিক, প্যালেস্তিনীয় কমিটি, যেখানে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা থাকবেন।
ট্রাম্পের তদারকি: ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতৃত্বাধীন ‘Board of Peace’ এই নতুন কাঠামো ও পুনরোন্নয়নের সবকিছু তদারকি করবে। এই বোর্ডে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যোগদান থাকবে এবং ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী টোনি ব্লেয়ারও থাকবেন।
অসামরিকীকরণ: হামাস গাজ়ার শাসনকার্যে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। সমস্ত সামরিক পরিকাঠামো, সুড়ঙ্গপথ ও অস্ত্র উৎপাদনের কারখানা ধ্বংস করতে হবে। গাজ়ার অসামরিকীকরণে নিরপেক্ষ সংস্থা দায়িত্বে থাকবে।
চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি
প্রস্তাবের ১৭ নম্বর দফায় হামাসকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যদি হামাস প্রস্তাব গ্রহণ না করে বা ঢিলেমি করে, সেক্ষেত্রে গাজ়াকে সন্ত্রাসমুক্ত করার কাজ আরও দ্রুত গতিতে এগোবে। ইজরায়েলি বাহিনীর পরিবর্তে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা বাহিনী সেই দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেবে।
এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধশালী সহাবস্থানের লক্ষ্যে আলোচনার ব্যবস্থাও করবে রাষ্ট্রপুঞ্জ।