সঙ্গীর মিষ্টি কথাতেও লুকিয়ে মৌখিক নির্যাতন! তাহলে কি করবেন জেনেনিন দেরি না করে

মৌখিক নির্যাতন একজন মানুষকে হতাশায় নিমজ্জিত করে, মানসিক অস্বস্তি সৃষ্টি করে এবং আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। এর ক্ষতিকর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আর সেই নির্যাতন যদি আসে সবচেয়ে কাছের মানুষ – জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে, তাহলে প্রতিক্রিয়া আরও ভয়াবহ হতে পারে।

সম্পর্ক বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সঙ্গীর মৌখিক নির্যাতন চেনার কিছু সুস্পষ্ট উপায় রয়েছে। এগুলো চিহ্নিত করতে পারলে এই ক্ষতিকর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব।

কথার ধরন: শুধুমাত্র উচ্চস্বরে কথা বলা মৌখিক নির্যাতনের লক্ষণ নয়। সঙ্গীর শারীরিক সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব বা অন্য যেকোনো বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য, এমনকি কোমল স্বরে বললেও, মৌখিক নির্যাতন হতে পারে। যদি সঙ্গী মিষ্টি হেসেও আপনার সম্পর্কে এমন কথা বলেন যা শুনে আপনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, তবে সেটিও এক ধরনের মৌখিক নির্যাতন।

নিয়ন্ত্রণ ও দোষারোপ: যদি আপনি সঙ্গীর কোনো ক্ষতিকর আচরণের বিষয়ে আলোচনা করতে যান এবং দেখেন যে আলোচনার মোড় ঘুরিয়ে আপনাকেই ভুক্তভোগী বানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তবে এটিও মৌখিক নির্যাতনের অংশ। এক পর্যায়ে সঙ্গী তার ভুল আচরণের জন্য আপনাকেই দায়ী করবে এবং আলোচনা শেষে আপনি বিশ্বাস করতে শুরু করবেন যে সত্যিই আপনারই ভুল ছিল। এখানেই শেষ নয়, সেই কল্পিত ‘অপরাধের’ প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে অনিচ্ছা সত্ত্বেও আপনাকে অনেক কিছু করতে বাধ্য হতে পারে।

আত্মবিশ্বাস হারানো: আপনার আত্মবিশ্বাসের অভাবের কারণ হতে পারে সঙ্গীর অসহযোগিতামূলক এবং সমালোচনামূলক আচরণ। সঙ্গী যদি ক্রমাগত আপনাকে ছোট করে দেখে, তবে এক সময় আপনিও নিজেকে ছোট মনে করতে শুরু করবেন। এটিও এক প্রকার মৌখিক নির্যাতন। পাশাপাশি, যদি আপনার মনে সর্বদা ঝগড়া বা কলহের আতঙ্ক বিরাজ করে, তবে সেটিও আপনাকে মানসিকভাবে দুর্বল করে তুলবে।

করণীয়:

এমন পরিস্থিতিতে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত পরিবার এবং বন্ধুদের মধ্যে যারা আপনার কাছের মানুষ, তাদের সাহায্য নেওয়া। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বোধ করলে সেইসব মানুষের সাথে সময় কাটান যারা আপনার ভালো চান এবং আপনাকে ভালোবাসেন।

যদি সঙ্গী ক্রমাগত দুর্ব্যবহার করতে থাকে, তবে এক সময় আপনাকেও এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সমস্যা চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে দৃঢ় হতে হবে এবং নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে শিখতে হবে। প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের পরামর্শ নিতে দ্বিধা করবেন না।

তবে, কোনো কিছুতেই পরিস্থিতি না বদলালে, নিজের মানসিক শান্তি ও সুস্থতার জন্য বিবাহবিচ্ছেদের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও ভাবতে হতে পারে। মনে রাখবেন, সুস্থ ও সম্মানজনক জীবন যাপন করা আপনার অধিকার।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy