চা-সিগারেট ছাড়া সকাল ব্যর্থ! সত্যিই কি এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে, নাকি এটি কেবলই একটি অজুহাত?

সিগারেট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও বহু মানুষ ধূমপান করে থাকেন। যারা দীর্ঘ দিন ধরে সিগারেটকে সঙ্গী বানিয়েছেন, তাদের প্রায় সকলেরই নিকোটিনের উপর এক প্রবল নির্ভরতা তৈরি হয়। ফলে যখনই ধূমপান ত্যাগ করার চেষ্টা করা হয়, তখনই নিকোটিন উইথড্রয়াল সিনড্রোমের সম্মুখীন হতে হয়। অনেক ধূমপায়ী এমনও দাবি করেন যে, সকালে চায়ের পরে একটি সিগারেট না ধরালে প্রাতঃকৃত্য সম্পন্ন করাই কঠিন। সত্যিই কি এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে, নাকি এটি কেবলই একটি অজুহাত?

এই বিষয়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশালিস্ট সৌতিক পাণ্ডা জানান, সিগারেটের সঙ্গে বাওয়েল মুভমেন্টের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এই কারণেই ধূমপানের অভ্যাসের সাথে সাথে টয়লেটে যাওয়ার একটি অভ্যাসও তৈরি হয়ে যায়। তামাকের নেশা শরীর ও মনকে এতটাই গভীরভাবে আবদ্ধ করে ফেলে যে, দৈনন্দিন শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপের সঙ্গেও ধূমপান জড়িয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষই অবগত। তবে নিকোটিন উইথড্রয়াল সিম্পটমের কারণে চেষ্টা করেও অনেকে ধূমপান ছাড়তে পারেন না। তাদের জন্য তার পরামর্শ হলো, দৃঢ় মানসিকতার সাথে সিগারেটকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রবল ইচ্ছাশক্তি এবং চিকিৎসকের পরামর্শের মাধ্যমে ধূমপান ত্যাগ করা সম্ভব।

আসলে সিগারেটে থাকা নিকোটিন একটি অত্যন্ত শক্তিশালী মাদকদ্রব্য। এটি খুব সহজেই আমাদের মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করতে পারে। দৈনন্দিন কাজকর্মের ক্ষেত্রে মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে এই নিকোটিন। ঠিক এই কারণেই সকালে চা বা কফি পান করার পর সিগারেট ধরালে তবেই অনেকে বাওয়েল মুভমেন্ট অনুভব করেন এবং প্রাতঃকৃত্যের তাগিদ অনুভব করেন। এমনকি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সিগারেট না খেলে ঘুম আসতেও অসুবিধা হয়। এটিও সেই নিকোটিনেরই প্রভাব।

সৌতিক পাণ্ডা আরও জানান, নিকোটিন প্যাচ ব্যবহারের মাধ্যমেও সিগারেট ত্যাগ করা যেতে পারে। নিকোটিন প্যাচ বাওয়েল মুভমেন্ট স্বাভাবিক রাখা থেকে শুরু করে মানসিক উদ্বেগ কমানো এবং ঘুম আনতেও সাহায্য করতে পারে। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিকোটিন প্যাচ ব্যবহার করা উচিত নয়। মনের জোর এবং কাউন্সেলিংয়ের সহায়তায় নিকোটিনের উপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy