কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ বা শারীরিক অক্ষমতা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে স্বামীকে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বঞ্চিত করা মানসিক নির্যাতনের শামিল বলে রায় দিয়েছে ওড়িশা হাইকোর্ট। এই রায়ের ভিত্তিতে আদালত এক স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন মঞ্জুর করেছে। এই রায়টি ভবিষ্যতে একই ধরনের মামলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
মামলাটি করেছিলেন এক স্বামী, যিনি হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫ অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন। এর আগে পারিবারিক আদালত তার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে স্বামী ওড়িশা হাইকোর্টে আপিল করেন।
বিচারপতি অরিন্দম সিনহা ও শিব শঙ্কর মিশ্রের একটি বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করে। আদালত বলেছে, স্বামী বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও স্ত্রী একতরফাভাবে শারীরিক সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করেছেন। আদালত স্বামীর পক্ষ থেকে দেওয়া ব্যক্তিগত বার্তাগুলো পরীক্ষা করে দেখেছে, যা তার প্রচেষ্টার প্রমাণ দেয়।
আদালত আরও দেখেছে, স্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন যে তাদের বিবাহিত জীবন শুরুই হয়নি (non-consummated)। তিনি কেন শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত ছিলেন, তার কোনো বৈধ বা যুক্তিসঙ্গত কারণও আদালতে দেখাতে পারেননি।
আদালত জানায়, পারিবারিক আদালতের আগের রায়টি ভুল ছিল, কারণ তারা “কিছু না কিছু শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল” বলে যে ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তা স্ত্রীর নিজের সাক্ষ্যের সঙ্গে মেলে না। হাইকোর্ট মনে করে, স্বামী মানসিক নির্যাতনের (ধারা ১৩(১)(i-a)) অধীনে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য যথেষ্ট কারণ দেখাতে সক্ষম হয়েছেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই রায়টি ভারতীয় সমাজে দাম্পত্য সম্পর্ক এবং এর শারীরিক দিকগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে সাহায্য করবে। বিবাহিত জীবনে সহবাস থেকে একতরফাভাবে বিরত থাকা, যদি তার কোনো বৈধ কারণ না থাকে, তবে তা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই এই রায়টি পারিবারিক সম্পর্কের বাস্তব সমস্যাগুলো তুলে ধরেছে এবং ভবিষ্যতে এমন মামলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।