বর্তমান সময়ে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এক নতুন ধরনের যৌন পরিচয় দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে, যার নাম ‘গ্রে-সেক্সুয়ালিটি’ (Graysexuality)। অনেক তরুণ-তরুণী সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছেন যে, তারা সম্পূর্ণভাবে সমকামী বা বিপরীতকামী নন, আবার সম্পূর্ণভাবে অ্যাসেক্সুয়ালও নন। তারা নিজেদেরকে এই দুটির মাঝামাঝি একটি ‘গ্রে’ বা ধূসর স্থানে দেখেন।
গ্রে-সেক্সুয়ালিটি কী?
গ্রে-সেক্সুয়ালিটি হলো এমন একটি যৌন পরিচয়, যা অ্যালো-সেক্সুয়াল (যারা নিয়মিত যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন) এবং অ্যাসেক্সুয়াল (যারা যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন না) এর মাঝে অবস্থিত। সহজ ভাষায়, গ্রে-সেক্সুয়ালরা খুব কম বা মাঝেমধ্যে যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন, অথবা শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতেই এমনটা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব
রেডিটের মতো প্ল্যাটফর্মে r/Greysexuality নামের একটি গ্রুপে ৮,৩০০-এর বেশি মানুষ নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছেন। টিকটক এবং ইউটিউবেও এমন ভিডিও হাজার হাজার ভিউ পাচ্ছে, যেখানে মানুষজন বলছেন কীভাবে তারা নিজেদের ‘গ্রে’ হিসেবে আবিষ্কার করেছেন।
লন্ডনের ড্যান বিসন নামের একজন কসমোপলিটন ইউকে-কে বলেন, “গ্রে-সেক্সুয়াল হওয়া মানে শুধু ‘আজকে ইচ্ছে নেই’ এমনটা নয়। এটি এমন একটি অভিজ্ঞতা, যেখানে মাসের পর মাস কোনো যৌন ইচ্ছা থাকে না, আবার হঠাৎ একদিন সেই ইচ্ছা ফিরে আসে।”
কেন এমন হচ্ছে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের সমাজে যৌন আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ে অনেক চাপ থাকে। যে কারণে যারা ভিন্নভাবে যৌন আকর্ষণ অনুভব করেন, তাদের জন্য নিজেদের পরিচয় খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে যায়। গবেষণা বলছে, এই নতুন প্রবণতার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে:
‘সেক্স রিসেশন’: তরুণ প্রজন্ম আগের চেয়ে কম যৌন সম্পর্কে জড়াচ্ছে।
সামাজিক চাপ: সোশ্যাল মিডিয়া এবং শরীর নিয়ে নিরাপত্তাহীনতাও এই মানসিকতার ওপর প্রভাব ফেলছে।
রাজনৈতিক উদ্বেগ: বর্তমান বিশ্বের নানা রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতাও এর একটি কারণ।
একজন রেডিট ব্যবহারকারী বলেন, “আমি এতদিন নিজেকে অস্বাভাবিক ভাবতাম। কিন্তু যখন আমার এই অনুভূতির একটি নাম পেলাম, তখন মনে হলো যেন আমি মুক্তি পেলাম।” এই ধরনের একটি নাম বা পরিচয় খুঁজে পাওয়ায় অনেকেই নিজেদেরকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছেন।