প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় লবণ যেন এক অপরিহার্য উপাদান। রান্নায় তো লবণ থাকেই, অনেকে আবার পাতে নিয়েও বসেন বাড়তি লবণ। বাদাম, শসা কিংবা টক জাতীয় ফল খাওয়ার সময় লবণ ছাড়া যেন চলেই না। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাসকে একাধিক রোগের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
হু-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ খেলে শুধু উচ্চ রক্তচাপই বাড়ে না, সেই সঙ্গে মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায় হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকিও! একইসঙ্গে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা।
গবেষকরা বিশ্বের ১৮৭টি দেশের সাধারণ মানুষের খাদ্যাভ্যাসের উপর সমীক্ষা চালিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য পেয়েছেন। সমীক্ষায় দেখা গেছে, অধিকাংশ দেশের মানুষই প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ গ্রহণ করে থাকেন। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, দৈনিক ৫ গ্রামের বেশি লবণ খাওয়া একেবারেই উচিত নয়।
হু পরিচালিত ওই গবেষণায় আরও উঠে এসেছে যে, বিশ্বজুড়ে গড়ে একজন মানুষ প্রতিদিন ৩.৯৫ গ্রাম লবণ খেয়ে থাকেন। তবে লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রবণতা দেখা যায় মধ্য এশিয়ার মানুষের মধ্যে। এই অঞ্চলের একজন ব্যক্তি দৈনিক গড়ে প্রায় ৫.৫১ গ্রাম লবণ গ্রহণ করেন। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে এর দ্বিগুণ লবণও খেয়ে থাকেন কেউ কেউ। শহর অঞ্চলের তুলনায় গ্রাম্য এলাকায় অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার প্রবণতা আরও বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সরাসরি জানাচ্ছে, অতিরিক্ত মাত্রায় লবণ খাওয়ার অভ্যাস হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বহুলাংশে বাড়িয়ে তোলে। তাই সুস্থ জীবনযাপন করতে চাইলে প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশি লবণ (যা প্রায় এক চা চামচের সমান) খাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
বছর খানেক আগে প্রকাশিত একটি সমীক্ষার তথ্য আরও ভয়াবহ। সেই সমীক্ষায় জানা যায়, প্রতি বছর ১৬ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম জমা হওয়ার কারণে। আর এই সোডিয়ামের প্রধান উৎস হলো আমাদের প্রতিদিনের লবণ।
সুতরাং, এখনই সতর্ক হোন। অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন। মনে রাখবেন, আপনার সামান্য সচেতনতাই আপনাকে রক্ষা করতে পারে অনেক বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকির হাত থেকে।