উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ২১ বছর বয়সী এক প্রতিবন্ধী মহিলাকে অপহরণের পর গণধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজে মহিলাকে আতঙ্কে ছুটতে দেখা গেছে, যেখানে একাধিক মোটরসাইকেলে তাঁকে ধাওয়া করা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে যখন ওই মহিলা তাঁর মামার বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে নিজের বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। রাস্তার দূরত্ব ছিল মাত্র এক কিলোমিটার। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, একটি নির্জন রাস্তায় তিনি ভয়ে দৌড়াচ্ছেন, আর পিছন থেকে তিন-চারটি বাইকে কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁকে তাড়া করছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি মোটরসাইকেল আরোহী তাঁকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
মহিলার পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে একাধিক ব্যক্তি মিলে গণধর্ষণ করে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর, পরিবারের সদস্যরা তাঁকে একটি পুলিশ ফাঁড়ির কাছে ঝোপের মধ্যে অচেতন ও ছিন্নভিন্ন অবস্থায় খুঁজে পায়। জ্ঞান ফেরার পর তিনি পুলিশকে পুরো ঘটনাটি জানান এবং গণধর্ষণের অভিযোগ আনেন।
ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত অভিযান চালায় এবং অভিযুক্ত অঙ্কুর ভার্মা ও হর্ষিত পান্ডেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় এবং দুজনই আহত হওয়ায় তাদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশাল পান্ডে জানান, “মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষায় ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছি এবং বাকি অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে।”
তবে এই ঘটনার পর পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে নির্যাতিতার পরিবার। তাদের দাবি, যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকাটি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, এসপি এবং বিচারকের সরকারি বাসভবনের কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও এমন একটি ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। পরিবারের আরও অভিযোগ, যে পুলিশ ফাঁড়ির কাছে মহিলাকে পাওয়া গিয়েছিল, তার আশেপাশের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো বিকল ছিল। বর্তমানে নির্যাতিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এই ঘটনায় এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।