আজকাল চুল পড়ার সমস্যা খুবই সাধারণ একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই এই সমস্যায় ভুগছেন এবং এর থেকে মুক্তি পেতে নানা ধরনের উপায় অবলম্বন করছেন। তবে সম্প্রতি কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, নিয়মিত শরীরচর্চা কেবল শরীরকে সুস্থ রাখে না, এটি চুলের বৃদ্ধি এবং চুল পড়া কমাতেও দারুণ কার্যকরী হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত ওয়ার্কআউট করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, যা সরাসরি মাথার ত্বকের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়লে চুলের গোড়ায় পুষ্টি পৌঁছানো সহজ হয়, যা চুলকে মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কোন ধরনের ব্যায়ামগুলো আপনার দৈনন্দিন রুটিনে যোগ করতে পারেন।
জগিং
জগিং একটি অন্যতম সেরা কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম। প্রতিদিন সকালে ৩০ মিনিট জগিং করলে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। এর ফলে মাথার ত্বকেও পর্যাপ্ত রক্ত পৌঁছায়, যা চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
হাই ইনটেনসিটি ইন্টারভাল ট্রেনিং (HIIT)
HIIT ব্যায়ামে কার্ডিও এবং শক্তি প্রশিক্ষণ একসাথে করা হয়। এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে তোলে এবং প্রচুর শক্তি খরচ হয়। চুলের বৃদ্ধির জন্য এটি খুব উপকারী। আপনি আপনার রুটিনে বারপি, স্কোয়াট, ক্রাঞ্চেস, পুশ-আপস, জাম্পিং জ্যাক এবং মাউন্টেন ক্লাইম্বিং-এর মতো HIIT ব্যায়াম যোগ করতে পারেন। প্রতিটি ব্যায়াম ৩০ সেকেন্ড ধরে করুন এবং প্রতিটির পর ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম নিন। এই ধরনের ৩ সেট ব্যায়াম করা যেতে পারে।
কার্ডিও
জগিংয়ের মতোই কার্ডিও ব্যায়াম, যেমন দৌড়ানো, সাইকেল চালানো বা দ্রুত হাঁটা, শরীরের পাশাপাশি মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং চুল পড়া রোধ করতে বিশেষভাবে কার্যকর।
শক্তি/ওজন প্রশিক্ষণ
যারা উচ্চ তীব্রতার ব্যায়াম পছন্দ করেন না, তারা জিমে গিয়ে ওজন প্রশিক্ষণ বা শক্তি প্রশিক্ষণ করতে পারেন। বেঞ্চ প্রেস, স্কোয়াট, ডেডলিফ্টের মতো ব্যায়াম রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
স্কাল্প ম্যাসাজ
ব্যায়ামের পাশাপাশি মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করাও খুব উপকারী। প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার করে নিয়মিত ম্যাসাজ করলে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ে, যা চুলের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।
স্ট্যান্ডিং ফোল্ড পোজ
মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ চুলের সমস্যার অন্যতম প্রধান কারণ। স্ট্যান্ডিং ফোল্ড পোজের মতো যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে দারুণ কার্যকর। নিয়মিত এই পোজ অভ্যাস করলে স্ট্রেস কমে, যার ফলে চুল পড়ার সমস্যাও কমে।
সুতরাং, শুধু ওষুধ বা শ্যাম্পু নয়, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমেও চুলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।