নতুন আয়কর বিল ২০২৫ লোকসভায় পাস, টিডিএস এবং বেনামী দানে কর ছাড় অব্যাহত

দেশের কর কাঠামোকে ঢেলে সাজিয়ে অবশেষে লোকসভায় পাস হলো নতুন আয়কর বিল ২০২৫। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন পেশ করা এই সংশোধিত বিলে ৬৩ বছরের পুরনো আয়কর আইনের বহু বিধানকে অক্ষুণ্ণ রাখার পাশাপাশি কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ করে টিডিএস রিফান্ড এবং বেনামী দানের উপর কর ছাড়ের বিষয়ে সংশোধনীগুলি করদাতাদের জন্য বড় স্বস্তির খবর নিয়ে এসেছে।

সময়সীমার পরেও টিডিএস রিফান্ড দাবি করার সুবিধা:

নতুন আয়কর বিলের একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হলো টিডিএস (TDS) রিফান্ড দাবির জন্য আয়কর রিটার্ন (ITR) দাখিলের সময়সীমার পরেও আবেদন করার সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে। এর আগে, মূল বিলটিতে বিধান ছিল যে, টিডিএস রিফান্ড পেতে হলে করদাতাদের নির্ধারিত তারিখের মধ্যেই আইটিআর দাখিল করতে হবে। কিন্তু, বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বাধীন ৩১ সদস্যের সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী এই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। এতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আইটিআর জমা দিতে না পারা করদাতাদের জন্য বড় সুবিধা হয়েছে।

এছাড়াও, টিডিএস সংশোধনের বিবৃতি দাখিলের সময়সীমা ছয় বছর থেকে কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে, যা করদাতাদের অভিযোগের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ধর্মীয় ও দাতব্য ট্রাস্টে বেনামী দানের উপর কর ছাড়:

সংশোধিত আয়কর বিলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, ধর্মীয় এবং দাতব্য ট্রাস্টে প্রদত্ত বেনামী দানের উপর কর ছাড় বহাল রাখা হয়েছে। সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, অলাভজনক সংস্থা (এনপিও) এবং দাতব্য ট্রাস্টে দেওয়া গোপন অনুদানের উপর কর আরোপের পুরনো বিধানটি তুলে নেওয়া হয়েছে। তবে, বিল অনুযায়ী, যদি কোনো ধর্মীয় ট্রাস্ট হাসপাতাল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো অন্যান্য কাজও পরিচালনা করে, তবে প্রাপ্ত গোপন অনুদানের উপর আইন অনুযায়ী কর প্রযোজ্য হতে পারে।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনসমূহ:

পেশাদারদের জন্য ই-পেমেন্টের সুবিধা: বিলের ১৮৭ ধারায় ‘পেশা’ শব্দটি যুক্ত করে সেইসব পেশাদারদের জন্য ইলেকট্রনিক পেমেন্ট পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাদের বার্ষিক আয় ৫০ কোটি টাকার বেশি।

আর্থিক ক্ষতির ক্যারি ফরোয়ার্ড: আয়ের ক্ষতির ক্যারি ফরোয়ার্ড (Carry Forward) এবং সেট অফ (Set Off) সংক্রান্ত বিধানগুলিকে নতুন করে সাজানো হয়েছে, যাতে তা আরও সহজবোধ্য হয়।

নতুন আয়কর বিলটি ১৯৬১ সালের আয়কর আইনকে প্রতিস্থাপন করবে এবং এতে সিলেক্ট কমিটির দেওয়া প্রায় সমস্ত সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই বিলটি করদাতাদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা নিয়ে এসেছে এবং একইসঙ্গে কর ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও সহজ করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy