মাত্র কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়িবহর যে সেতু দিয়ে গিয়েছিল, সেই হুগলির আরামবাগে দ্বারকেশ্বর নদের উপর নির্মিত রামকৃষ্ণ সেতুর একাংশের রেলিং ভেঙে পড়ায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সোমবার গভীর রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সেতুর গুরুত্বপূর্ণ রেলিং ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন এবং যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
রাত প্রায় ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ আচমকা সেতুর একটি অংশের রেলিং হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। রামকৃষ্ণ সেতুটি হুগলি জেলার সঙ্গে বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান এবং পুরুলিয়া-সহ একাধিক জেলার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এই সেতু দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে। রেলিং ভেঙে যাওয়ার পরেও ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল অব্যাহত থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আরামবাগ থানার পুলিশ। ভাঙা অংশটি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণে দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলা করা হচ্ছিল। এই দুর্ঘটনার পর তাদের আশঙ্কা, যদি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা না হয়, তাহলে যেকোনো মুহূর্তে সেতুটি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে জেলার সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। তারা অবিলম্বে একটি বিকল্প সেতু নির্মাণ বা বর্তমান সেতুটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক মধুসূদন বাগ। তিনি অভিযোগ করেন, “মুখ্যমন্ত্রী আসবেন বলে ওই রাস্তায় তড়িঘড়ি জোড়াতাপ্পি দিয়ে কাজ চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজের আসল ছবি আজ প্রকাশ্যে এসেছে।” তিনি আরও বলেন, আরামবাগবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও নতুন সেতু নির্মাণের বিষয়ে রাজ্য সরকার কেবল আশ্বাস দিয়ে গেছে, কোনো বাস্তব পদক্ষেপ নেয়নি।
যদিও শাসক দলের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি, তবে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুত মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনা আবারও রাজ্য সরকারের পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের দুর্বলতাকে তুলে ধরেছে এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।