ওডিশায় আত্মহত্যার ঘটনা যেন থামছেই না। এবার বরগড়ে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, যা নিয়ে এলাকায় শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ১৩ বছরের ওই কিশোরী নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। গত এক মাসে এটি ওডিশায় গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চতুর্থ ঘটনা।
পুলিশ সূত্রে খবর, কিশোরীর বাবা একজন পরিযায়ী শ্রমিক এবং মা তার মামার বাড়িতে থাকেন। রাখি উপলক্ষে ওই ছাত্রী তার মামার বাড়ি তেন্ডাপাটায় বেড়াতে গিয়েছিল। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। তার শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে বীর সুরেন্দ্র সাই ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ (ভিমসার)-এ নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাদের অভিযোগ, খবর দেওয়ার পরও অ্যাম্বুলেন্স আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট দেরি করে। এমনকি পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি করে বলে তারা অভিযোগ করেন। কিশোরীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে তার পরিবারের সদস্যরা এখনও কিছু জানাননি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং আত্মহত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ওডিশায় গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত ১২ই জুলাই এক ছাত্রী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে কলেজের মধ্যেই নিজের গায়ে আগুন দেন এবং পরে তার মৃত্যু হয়। ১৯শে জুলাই বালাঙ্গায় তিন দুষ্কৃতী এক নাবালিকাকে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর ২রা আগস্ট কেন্দ্রাপাড়ায় এক কলেজ ছাত্রীর দগ্ধ দেহ তার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়।
এই ঘটনাগুলো সামনে আসার পর রাজ্য সরকার প্লাস্টিকের বোতলে পেট্রল বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও, একের পর এক ঘটনা প্রমাণ করছে যে এই নিষেধাজ্ঞা যথেষ্ট কার্যকর হয়নি।