নয়ডার একটি ডে-কেয়ার সেন্টারে দেড় বছরের এক শিশু-কন্যার ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, এক পরিচারিকা শিশুটিকে বারবার মারধর করছে এবং ইচ্ছে করে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে। শিশুর উরুতে কামড়ের একাধিক দাগও পাওয়া গেছে, যা এই নির্যাতনের ভয়াবহতা তুলে ধরেছে। এই ঘটনায় সেক্টর ১৩৭-এর ‘প্যারাস টিয়েরিয়া’ আবাসনের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে যখন শিশুটির বাবা-মা তার উরুতে অস্বাভাবিক দাগ দেখতে পান। প্রথমে তাঁরা এটিকে অ্যালার্জি ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে ডে-কেয়ারের অন্য শিক্ষকরা তাঁদের জানানোর পর ডাক্তারী পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায় যে সেগুলো আসলে কামড়ের চিহ্ন। এরপর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে এই ভয়াবহ নির্যাতনের ছবি সামনে আসে। ফুটেজে দেখা যায়, অভিযুক্ত পরিচারিকা শিশুটিকে বারবার চড় মারছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে মাটিতে ফেলে দিচ্ছে, যা শিশুর তীব্র কান্নার কারণ হয়।
আক্রান্ত শিশুর বাবা সন্দীপ জানান, গত ২১ মে থেকে তাঁরা প্রতিদিন দুই ঘণ্টার জন্য তাদের মেয়েকে ওই ডে-কেয়ারে পাঠাচ্ছিলেন। এই দুই ঘণ্টার জন্য তাঁদের ২,৫০০ টাকা দিতে হতো। ডে-কেয়ার কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছিল যে তিনজন শিক্ষক শিশুর দেখাশোনার দায়িত্বে থাকবেন, কিন্তু বাস্তবে শিশুটিকে একজন পরিচারিকার কাছেই রাখা হতো।
সন্দীপ আরও অভিযোগ করেছেন যে, ডে-কেয়ারের মালিক এই ঘটনার সময় কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। বরং, অভিযুক্ত পরিচারিকার সঙ্গে মিলে তাঁরা উল্টো বাবা-মাকে হুমকি দেন। তিনি আরও দাবি করেন, আরেকটি পরিবারের শিশুও একই ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং তারাও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাবে।
পুলিশ এই ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। শিশুর মেডিক্যাল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং অভিযুক্ত পরিচারিকাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিচারিকা নিজেও নাবালিকা। ডে-কেয়ারটির লাইসেন্স এবং কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াতে কোনো অনিয়ম ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্দীপের আবেদন, “ডে-কেয়ারের মালিক ও অভিযুক্ত পরিচারিকার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে আর কোনো শিশুর সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে।”