পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে ভারতকে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি পাকিস্তান ভারতের পক্ষ থেকে কোনো অস্তিত্বের হুমকি অনুভব করে, তাহলে ‘এতে অর্ধেক বিশ্ব ডুবে যাবে।’ একটি দেশের সেনাপ্রধানের অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে বিদেশি মাটিতে দাঁড়িয়ে সরাসরি পরমাণু হামলার হুমকি দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ী এবং অনারারি কনসাল আদনান আসাদের টাম্পায় আয়োজিত এক ডিনারে মুনির বলেন, ‘আমরা একটি পরমাণু শক্তিধর জাতি। যদি আমরা অনুভব করি যে আমরা ডুবে যাচ্ছি, তাহলে আমরা অর্ধেক বিশ্বকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে যাব।’
এই সফরের সময় মুনির শুধু পরমাণু হুমকি দিয়েই থামেননি, সিন্ধু নদীর জলবণ্টন নিয়েও তিনি ভারতকে আক্রমণ করেছেন। চার দিনের সংঘর্ষের পর এটি ছিল তাঁর দুই মাসের মধ্যে দ্বিতীয় মার্কিন সফর। মুনির বলেন, ‘আমরা ভারতের বাঁধ নির্মাণের জন্য অপেক্ষা করব এবং যখন এটি তৈরি হবে, তখন আমরা দশটি ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে এটি ধ্বংস করব।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘সিন্ধু কোনো ভারতীয় পরিবারের সম্পত্তি নয়। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কোনো অভাব নেই, আলহামদুলিল্লাহ।’
ভারতের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তির সঙ্গে পাকিস্তানের দুর্বল অবস্থার তুলনা করে মুনির বলেন, ‘ভারত হাইওয়েতে ফেরারি গাড়ির মতো চকচক করা মার্সিডিজ, কিন্তু আমরা নুড়ি ভর্তি ডাম্প ট্রাক। যদি ট্রাকটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তাহলে কার ক্ষতি হবে?’
মুনির ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের অভিযোগও এনেছেন। তিনি বলেন, ‘ভারত নিজেকে বিশ্বগুরু হিসেবে তুলে ধরতে চায়, কিন্তু বাস্তবে তা থেকে অনেক দূরে।’ কানাডায় শিখ নেতার হত্যা, কাতারে আট ভারতীয় নৌ কর্মকর্তার গ্রেফতার এবং কুলভূষণ যাদব মামলার মতো ঘটনা উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন যে এগুলি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদে ভারতের জড়িত থাকার ‘অকাট্য প্রমাণ।’
এই সফরের সময় মুনির বিদায়ী মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ড (CENTCOM) কমান্ডার জেনারেল মাইকেল কুরিলার অবসর অনুষ্ঠানে এবং অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপারের অভিষেক অনুষ্ঠানেও যোগ দেন। তিনি মার্কিন সামরিক কর্তাদের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেনকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান। উল্লেখ্য, দুই মাসের মধ্যে মুনিরের এটি ছিল দ্বিতীয় মার্কিন সফর। জুন মাসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন। এই সফরের পর দুই দেশের মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল।