গত ২৩ এপ্রিল সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার পর ভারত যখন পাকিস্তানকে কঠোর বার্তা দেয়, তার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তান ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তান গত দুই মাসে ১২৪০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে দেশটির সংসদে জানানো হয়েছে। শুক্রবার (৮ আগস্ট) পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া তথ্যে এই ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ করা হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন, ২০২৫ সালের মধ্যে ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ থাকায় এই ক্ষতি হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০টি ভারতীয় বিমানকে ভিন্ন পথে যাতায়াত করতে হয়েছে, যার ফলে পাকিস্তান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (PAA) বড় ধরনের রাজস্ব হারিয়েছে।
যদিও এই ক্ষতির পরেও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিজেদের সাফল্য দাবি করে বলেছে যে, ২০১৯ সালের তুলনায় PAA-এর মোট রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে তাদের রাজস্ব ছিল ৫০৮,০০০ ডলার, যা বেড়ে ২০২৫ সালে ৭৬০,০০০ ডলারে পৌঁছেছে। তবে এই আর্থিক ক্ষতি সত্ত্বেও, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা সবার ঊর্ধ্বে বলে মন্তব্য করেছে মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে সীমান্ত উত্তেজনার কারণে আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ায় পাকিস্তান ৫৪ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছিল।
বর্তমানে ভারতীয় বিমানের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা এখনো বন্ধ রয়েছে এবং আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানা গেছে। একইভাবে, ভারতীয় আকাশসীমাও পাকিস্তানের বিমানের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে যে, দেশের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে কোনো মূল্যই বেশি নয়।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে জঙ্গি সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)-এর হামলায় ২৬ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ভারত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে, কূটনৈতিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণ করে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে।