“ওই মহিলার বিষয়ে কথা বলার কোনও…”-ফের মহুয়া সম্পর্কে কল্যাণের বিতর্কিত মন্তব্য

সম্প্রতি তৃণমূলের অন্দরে সাংসদদের মধ্যে চলা বিতর্কে নতুন মোড় এসেছে। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ভুল মন্তব্য করার জন্য অনুতপ্ত প্রকাশ করেছেন। একই সাথে তিনি কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের প্রতি তার ক্ষোভ বিন্দুমাত্র কমাননি। বরং, আবারও তাকে ‘নিম্নমানের’ বলে আখ্যা দিয়ে বিতর্কের আগুনে আরও ঘি ঢেলেছেন।

শনিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মহুয়া মৈত্রর বিষয়ে কথা বলা অর্থহীন। এটি কেবল সময় ও এনার্জির অপচয়।” তিনি আরও যোগ করেন, “ওই মহিলার বিষয়ে কথা বলার কোনো মানেই নেই আমার কাছে। উনি বড্ড নিম্নমানের। ওঁর জন্যই আমার মাথা গরম হয়েছিল এবং সেই কারণেই দিদিকে ভুলভাল কথা বলেছিলাম। এখন আমার খুব খারাপ লাগছে।”

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পরিবর্তিত মনোভাবের কারণ হিসাবে তিনি এক জুনিয়র আইনজীবীর কাছ থেকে পাওয়া একটি টেক্সট মেসেজের কথা উল্লেখ করেন। তার মতে, ওই মেসেজটি পাওয়ার পরই তিনি বুঝতে পারেন যে মহুয়া মৈত্রের বিষয়ে আলোচনা করা তার জন্য সময় এবং শক্তির অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। কল্যাণ বলেন, “উনি আমার মনোযোগ পাওয়ার যোগ্য নন। ওঁর প্রতি মনোযোগ দেওয়াই আমার ভুল ছিল।”

রাখিপূর্ণিমার দিন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার কথোপকথন প্রসঙ্গে কল্যাণ জানান, তিনি দিদিকে প্রণাম জানিয়েছেন এবং দিদি তাকে তিনবার আশীর্বাদ করেছেন। তিনি আবারও তার ‘অনুতাপের’ কথা প্রকাশ করেন, কিন্তু একই সাথে তার এই মানসিক অবস্থার জন্য মহুয়া মৈত্রকেই দায়ী করেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দলের সাংসদদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর থেকেই এই বিতর্কের সূত্রপাত। সেই বৈঠকে লোকসভায় দলের অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের অভাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এরপরই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভার দলনেতার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই ঘটনার পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার মুখ্য সচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে এক্স (পূর্বের টুইটার) হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক পডকাস্টে মহুয়া মৈত্র কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে তার নাম না করেই ‘শূকরশাবকের সঙ্গে লড়াই’ এর উপমা ব্যবহার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “নারীবিদ্বেষী, হতাশ রাজনৈতিক নেতা সব দলেই রয়েছেন। সংসদেও তার প্রতিফলন আছে।” এর জবাবে কল্যাণ পাল্টা মহুয়ার মন্তব্যকে ‘অবমাননাকর’ এবং ‘সাধারণ নাগরিক রীতির পরিপন্থী’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy