আরজি কর হাসপাতালের নিহত তরুণী ইন্টার্নের বাবা-মায়ের পর এবার সিবিআই তদন্তের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি এই জঘন্য অপরাধের সুবিচার নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং নতুন করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।
দিলীপ ঘোষ বলেন, “যখন এমন একটি জঘন্য অপরাধে সুবিচার মিলবে না, তখন স্বাভাবিকভাবেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে ঘিরে প্রশ্ন উঠবে।” তিনি আরও বলেন, “আদালতের মাধ্যমে নতুন করে নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু হওয়া উচিত। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপেক্ষিত হয়েছে। যারা এখন তদন্ত করছে, তাদের বাদ দিয়ে একটি নতুন তদন্তকারী সংস্থাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হোক।”
গণআন্দোলন ও শাসকদলের ভূমিকা
আরজি কর কাণ্ডের এক বছর পূর্তিতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। এই আন্দোলনের প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ শাসকদলের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “নির্যাতিতার বাবা-মা এখনও বিচার পাননি। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে এই মামলায় সুবিচার হয়নি, তাই তারা রাস্তায় নেমেছেন। কিন্তু শাসক দল এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে চাইছে। সরকার এই আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে বলেই এত কড়াকড়ি।” নবান্ন অভিযানের জন্য যে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি বলেন, “এই আন্দোলন এখন আর কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। এটা জনআন্দোলনে রূপ নিয়েছে। সরকার কত মানুষ রাস্তায় নামবেন, তা আন্দাজ করতে পারছে না, তাই ভয়ের মধ্যে রয়েছে।”
ভোটার তালিকা ও নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপের প্রশংসা
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে দিলীপ ঘোষ বলেন, “গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু হলেই সরকার মামলা দিয়ে তা দমন করার চেষ্টা করে। সরকার যখন চাপে পড়ে, তখন ইমেজ রক্ষায় নানা চাপ সৃষ্টি করে। ডাক্তারদের সাসপেন্ড বা ট্রান্সফার করে বশে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।”
একই সঙ্গে তিনি ভোটার তালিকা সংশোধন এবং নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “শাসকদল বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় রেখে ক্ষমতায় থাকতে চায়। তবে নির্বাচন কমিশন এখন সক্রিয় হয়েছে এবং মানুষও আশাবাদী যে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বিহারের সাফল্য দেখিয়ে দিয়েছে যে প্রশাসনিক সদিচ্ছা থাকলে কিছুই অসম্ভব নয়।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, “কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করে। তারা যদি মনে করে ভোট হবে না, তাহলে তা স্থগিত হওয়াও সম্ভব। রাজ্য সরকারকে একদিন না একদিন কমিশনের নির্দেশ মেনে নিতেই হবে।”