ভাত শুনলেই যারা ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে আঁতকে ওঠেন অথবা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছেন পুষ্টিবিদরা। তারা বলছেন, এশিয়ার বাসিন্দারা হাজার হাজার বছর ধরে ভাত খেয়ে আসছেন। তাই পুরোপুরি ভাত ত্যাগ করা বোকামি। বিশেষত, পরিমিত পরিমাণে ভাত খেলে হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের মতো রোগ ঠেকানো সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে পুষ্টিবিদরা জোর দিচ্ছেন সাদা ভাতের পরিবর্তে ঢেঁকি ছাঁটা লাল বা কালো চালের উপর।
পুষ্টিবিদদের মতে, সাদা চাল অতিরিক্ত পালিশ করার ফলে তার পুষ্টিগুণ অনেকটাই কমে যায়। কিন্তু কালো চাল পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে সাদা চালের চেয়ে ক্যালোরি কম থাকে এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। সম্প্রতি গবেষণায় দেখা গেছে, কালো চালে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
কালো চালের উপকারিতা:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: কালো চালে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও উন্নত করে।
ফাইবারের উৎস: এতে সাদা, লাল বা ব্রাউন রাইসের তুলনায় ফাইবারের পরিমাণ অনেকটাই বেশি থাকে, যা হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: কালো চালের অ্যান্থোসায়ানিন উপাদান শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব রুখে দিতে পারে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।
হৃদপিণ্ড ও লিভারের সুরক্ষা: এটি হৃদয় এবং লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা কমায়।
গ্লুটেন-মুক্ত: যারা গ্লুটেন-সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিশ্চিন্তে কালো চালের ভাত খেতে পারেন, কারণ এটি গ্লুটেন-মুক্ত।
বিশেষ টিপস:
কালো চাল রান্না হতে সাদা চালের চেয়ে একটু বেশি সময় লাগে। তাই রান্নার আগে অন্তত আগের রাত থেকে এটি ভিজিয়ে রাখা ভালো। রান্নার পরে কিছু প্রজাতির কালো চাল গাঢ় বেগুনি বর্ণ ধারণ করে, যা দেখতেও সুন্দর। এই চাল দিয়ে সুস্বাদু পায়েসও তৈরি করা যায়। সাধারণত, এক কাপ চালের জন্য দুই কাপ জল দিতে হয়। তবে যারা ফ্যান ঝরিয়ে খেতে চান, তারা একটু বেশি জল ব্যবহার করতে পারেন।
সুতরাং, সুস্থ থাকতে চাইলে সাদা ভাতের বদলে কালো চালকে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।