গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হল প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনা (PMMVY)। এই যোজনার আওতায় রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা আগামী ১৫ আগস্ট, ২০২৫ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। নারী ও শিশু বিকাশ মন্ত্রক এই বিশেষ রেজিস্ট্রেশন অভিযানের সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে, যাতে সমস্ত যোগ্য মহিলা এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন।
২০১০ সালে প্রথম চালু হওয়া এই প্রকল্পটি ২০১৭ সালে নতুন রূপে আনা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের পুষ্টিকর খাবারের জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া, স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং কন্যা সন্তানের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলা। অঙ্গনওয়াড়ি এবং আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যোগ্য মহিলাদের রেজিস্ট্রেশন করাতে সাহায্য করছেন।
কত টাকা আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায়? এই প্রকল্পের আওতায় প্রথমবার মা হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার থেকে মোট ৫০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই অর্থ দুটি কিস্তিতে সরাসরি সুবিধাভোগীর আধার-সংযুক্ত ব্যাংক বা পোস্ট অফিস অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়।
- প্রথম কিস্তি: গর্ভাবস্থা নিবন্ধনের সময় ৩০০০ টাকা।
- দ্বিতীয় কিস্তি: সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সময় ২০০০ টাকা।
যদি কোনো মহিলা দ্বিতীয়বার গর্ভধারণের সময় একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন, তাহলে সরকার থেকে আরও ৬০০০ টাকা দেওয়া হয়। এই আর্থিক সহায়তা মা ও শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
কারা এই প্রকল্পের জন্য যোগ্য? এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। গর্ভবতী মহিলার বয়স কমপক্ষে ১৯ বছর হতে হবে এবং পরিবারের বার্ষিক আয় ৮ লক্ষ টাকার কম হতে হবে। মনরেগা কার্ড, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির সুবিধাভোগী, ই-শ্রম কার্ড বা বিপিএল কার্ডধারী এবং প্রতিবন্ধী মহিলারাও এই প্রকল্পের জন্য যোগ্য।
সারা দেশে ব্যাপক সাড়া: সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার অধীনে সারা দেশে ৪ কোটিরও বেশি মহিলা অন্তত একটি কিস্তির সুবিধা পেয়েছেন। সরকার এখন পর্যন্ত মোট ১৯,০২৮ কোটি টাকা বিতরণ করেছে। প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (PIB) জানিয়েছে যে, এই প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘মিশন শক্তি’র ‘সামর্থ্য’ উপ-প্রকল্পের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, যার লক্ষ্য হল মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানো।