দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে থাকার নতুন রেকর্ড গড়লেন অমিত শাহ। এতদিন এই কৃতিত্বের অধিকারী ছিলেন বিজেপির প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। মঙ্গলবার আডবাণীকে ছাপিয়ে এই নজির গড়েন শাহ। তাঁর এই সাফল্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্ব।
এনডিএ-এর সংসদীয় দলের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি ৫ আগস্টকে ঐতিহাসিক দিন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই দিনেই আমরা সাংবিধানিক পথে জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ অধিকার দেওয়া ৩৭০ ধারা বাতিল করেছি।” একইসঙ্গে তিনি শাহের দীর্ঘমেয়াদী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার কৃতিত্বেরও প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইয়ে তো অভি শুরুওয়াত হ্যায়… অভি অর আগে জানা হ্যায়” (এটি কেবল শুরু, আরও অনেক দূর যেতে হবে)। মোদীর এই মন্তব্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে জল্পনা তৈরি করেছে যে, ভবিষ্যতে শাহ আরও উচ্চতর দায়িত্ব পেতে পারেন, এমনকি তাঁকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবেও বিবেচনা করা হতে পারে।
অমিত শাহ ২০১৯ সালের ৩০ মে প্রথমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে আসীন হন এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় দফায় তিনি এই পদে নিযুক্ত হন। মঙ্গলবার পর্যন্ত তাঁর কার্যকাল ২,২৫৮ দিন পূর্ণ হয়েছে। এর আগে লালকৃষ্ণ আডবাণী ১৯৯৮ সালের ১৯ মার্চ থেকে ২০০৪ সালের ২২ মে পর্যন্ত মোট ২,২৫৬ দিন এই পদে ছিলেন। এই তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন গোবিন্দ বল্লভ পন্থ, যাঁর কার্যকাল ছিল ৬ বছর ৫৬ দিন। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু অমিত শাহকে অভিনন্দন জানিয়ে এক্স (পূর্বে টুইটার) এ লিখেছেন, “৩৭০ ধারা বাতিল থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান পর্যন্ত তাঁর অটল সংকল্প নতুন ভারতকে রূপদান করে চলেছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র বিজেপি নেতা বলেন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে অমিত শাহ বামপন্থী চরমপন্থা হ্রাস, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধ করা এবং জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।” তিনি আরও বলেন, শাহ সংঘের আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাস্তববাদী। এই নতুন রেকর্ড কেবল একটি সংখ্যা নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে অমিত শাহের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের এক স্পষ্ট ইঙ্গিত।