২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের ৯ হাজার নেতা-কর্মীর সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন। এই বৈঠকে তিনি অসম সরকারের পক্ষ থেকে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের এনআরসি নোটিস পাঠানোর ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিষেকের অভিযোগ, এটি বাংলার প্রকৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার একটি চক্রান্ত এবং এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীরবতা নিন্দনীয়।
বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বিশেষ নিবিড় সংশোধন’ (SIR) প্রক্রিয়াকে এনআরসি-র রোডম্যাপ বলে আখ্যা দেন। সম্প্রতি কোচবিহারের দিনহাটার উত্তমকুমার ব্রজবাসী, নিশিকান্ত দাস, মোমিনা বিবি এবং আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটার অঞ্জলি শীল-এর পাশাপাশি কোচবিহারের দীপঙ্কর সরকারকেও অসম সরকারের পক্ষ থেকে এনআরসি-র নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিষেক বলেন, বিজেপি বাংলা ভাষা ও বাঙালিকে অসম্মান করছে এবং এই বিষয়ে কোনো বিজেপি বিধায়ক প্রতিবাদ করেননি। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “বাংলা কোনোভাবেই মাথা নত করবে না এবং আগামী দিনে নেতৃত্ব দেবে।” তৃণমূলের তৃণমূল স্তর পর্যন্ত ‘ভাষা অস্মিতা রক্ষা’ করার নির্দেশ দেন তিনি।
বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নতুন প্রকল্প ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’-এর বিষয়েও আলোচনা করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বুথস্তরের মানুষের কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে দায়িত্ব নিতে হবে বলে তিনি নির্দেশ দেন। এই প্রকল্পের সুবিধা যেন স্বচ্ছভাবে মানুষের কাছে পৌঁছায়, সে বিষয়েও তিনি জোর দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটার তালিকা থেকে ‘প্রকৃত ভোটার’ বাদ না পড়া, বাংলা ভাষার ‘অস্মিতা রক্ষা’ এবং মানুষের দোরগোড়ায় পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার মতো বিষয়গুলিকে সামনে রেখে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত ২০২৬ সালের নির্বাচনের রণকৌশল তৈরি করে দিলেন। বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দেওয়া ‘ভাষা আন্দোলন’-এর ডাকটি মনে করিয়ে দেন এবং নেতা-কর্মীদের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দেন।