ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO এবং পাকিস্তানের SUPARCO-এর যাত্রাপথ ভিন্ন হলেও, দু’দেশের মধ্যে মহাকাশ গবেষণার সক্ষমতার পার্থক্য এখন স্পষ্ট। ১৯৬১ সালে SUPARCO প্রতিষ্ঠিত হলেও, আজ পাকিস্তান তার মহাকাশ কর্মসূচির জন্য চীনের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। অন্যদিকে, ১৯৬৯ সালে যাত্রা শুরু করা ISRO বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী মহাকাশ সংস্থা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
পাকিস্তানের মহাকাশ গবেষণার প্রধান সমস্যাগুলো হলো:
- বাজেট স্বল্পতা: SUPARCO-এর জন্য বাজেট বরাদ্দ মাত্র ৩৬ মিলিয়ন ডলার, যা খুবই অপ্রতুল।
- সামরিক নেতৃত্ব: গত ১১ বছর ধরে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা এই সংস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার ফলে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের দিকটি দুর্বল হয়ে পড়েছে।
- চীনের উপর নির্ভরশীলতা: পাকিস্তান তার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ এবং নভোচারী প্রশিক্ষণের জন্য সম্পূর্ণভাবে চীনের উপর নির্ভরশীল।
- পরমাণু কর্মসূচিতে মনোযোগ: পাকিস্তানের সরকার মহাকাশ গবেষণার চেয়ে পরমাণু কর্মসূচিতে বেশি মনোযোগ দিয়েছে, যার ফলে মহাকাশ খাত পিছিয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, ISRO স্বাধীনভাবে চন্দ্রযান, মঙ্গলযান ও গগনযানের মতো বড় বড় মিশন সম্পন্ন করেছে। ভারতের বাজেট ১.৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং সংস্থাটি নিজস্ব প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। ISRO এ পর্যন্ত ১২০টিরও বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে, যেখানে পাকিস্তান চীনের সাহায্যে মাত্র ৬টি স্যাটেলাইট পাঠাতে সক্ষম হয়েছে।
ভারতের লক্ষ্য ২০৪৭ সালের মধ্যে মহাকাশ গবেষণায় সুপারপাওয়ার হওয়া। বিপরীতে, পাকিস্তান ২০৪০ সালে মহাকাশে পা রাখার পরিকল্পনা করছে, যার জন্যও তাদের চীনের সাহায্যের প্রয়োজন। এই তুলনা থেকে বোঝা যায়, ভারত শিক্ষা ও গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিয়ে যেখানে বৈশ্বিক মানচিত্রে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে, সেখানে পাকিস্তান সামরিক ও পরমাণু কর্মসূচিতে মনোযোগ দিয়ে পিছিয়ে পড়েছে।