বহু কোটি টাকার অর্থ তছরুপ মামলার তদন্তে বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মঙ্গলবার সকালে রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল আম্বানিকে মুম্বাইয়ে ইডির প্রধান কার্যালয়ে তলব করা হয়। জানা গেছে, তাঁর সংস্থাগুলির আর্থিক লেনদেনের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি এই তদন্ত শুরু করেছে।
ইডি সূত্রে খবর, অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তাঁর সংস্থাগুলি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণে ঋণ নিয়েছিল, কিন্তু সেই অর্থ অননুমোদিত খাতে ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, সেই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে। একাধিক বেসরকারি ব্যাংকের অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি এই তদন্ত শুরু করে। এর আগে কেন্দ্রীয় সংস্থাটি অনিলের অফিস এবং তাঁর সহযোগী সংস্থাগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করেছে।
তদন্তের স্বার্থে যাতে অনিল আম্বানি দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন, সে কারণে সম্প্রতি ইডি তাঁর বিরুদ্ধে একটি লুক আউট সার্কুলার (LOC) জারি করেছে। এই সার্কুলার জারির পরেই তদন্তে গতি আসে এবং মঙ্গলবার তাঁকে তলব করা হয়।
এই মামলায় মূলত রিলায়েন্স ক্যাপিটাল, রিলায়েন্স হোম ফিনান্স এবং অন্যান্য সহযোগী সংস্থাগুলির আর্থিক কার্যক্রমের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে অর্থ স্থানান্তর, শেয়ার বাজারে কারচুপি এবং বিদেশি বিনিয়োগ সংস্থার সঙ্গে অনিয়মিত লেনদেনের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে ইডি। এর জন্য ব্যাংক ঋণ সংক্রান্ত তথ্য, অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্ট এবং ই-মেইল যোগাযোগ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
ইডি জানিয়েছে যে, অনিল আম্বানিকে একাধিক পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে এবং রিলায়েন্স গ্রুপের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও তলব করা হতে পারে। ইতিমধ্যে সংস্থার অ্যাকাউন্ট ও আর্থিক লেনদেনের তথ্য ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই রিলায়েন্স গ্রুপের শেয়ারের দামে বড়সড় পতন দেখা যায়। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এক সময়ের অন্যতম শীর্ষ ধনী অনিল আম্বানির ব্যবসা গত এক দশকে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছে এবং তাঁর একাধিক সংস্থা দেউলিয়া ঘোষিত হয়েছে। নতুন এই তদন্ত সেই দুর্দিনকে আরও বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, ইডির তদন্তে নতুন কী তথ্য উঠে আসে।