লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই নানা ইস্যুতে ব্যাকফুটে থাকা বঙ্গ বিজেপিকে চাঙা করতে সোমবার দিল্লিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন রণকৌশল তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ, বাংলার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনশল, মঙ্গল পাণ্ডে, সতীশ ধুন্দ এবং আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী।
দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে অমিত শাহ তৃণমূলের ‘বাঙালির অস্মিতা’ এবং ‘বহিরাগত’ তত্ত্বের মোকাবিলা করার জন্য বঙ্গ বিজেপিকে সতর্ক করেছেন। তিনি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, বিজেপি যে বাংলা-বিরোধী নয়, তা প্রতিটি প্রচারে তুলে ধরতে হবে। লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল যেভাবে বাঙালি আবেগ ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছে, তার পাল্টা কৌশল তৈরি করার নির্দেশ দেন তিনি।
অমিত শাহ জেলাভিত্তিক সংগঠনকে মজবুত করার ওপর জোর দিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে যে আসনগুলিতে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হার হয়েছে, সেখানে বুথ কমিটি গঠনে কেন দেরি হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, দ্রুত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে সিএএ ইস্যুও গুরুত্ব পেয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সিএএ সংক্রান্ত ক্যাম্পগুলিতে কোনও গাফিলতি না রাখার বার্তা দিয়েছেন। সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের এই সিএএ হেল্পডেস্কে আহ্বান জানাতে দেখা গিয়েছিল।
বৈঠকের পর দ্রুত জেলাস্তরের নেতৃত্বদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ী, সোমবার রাতে রাজ্য নেতারা কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। পাশাপাশি, জেলা সভাপতিদের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়। জানা গেছে, তৃণমূল যখন বিভিন্ন ইস্যুতে সুর চড়াবে, তখন তার পাল্টা হিসেবে রাজ্যজুড়ে ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই বৈঠকের কার্যকারিতা পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার সকালে শমীক ভট্টাচার্য এবং সুকান্ত মজুমদার ফের অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন।