দলের কোর কমিটির আহ্বায়ক পদ এবং ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ফিরে পাওয়ার পরই স্বমহিমায় ফিরে এসেছেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডল। মাসখানেক আগে একটি ভাইরাল অডিও (যা তিনি এআই দ্বারা তৈরি বলে দাবি করেছিলেন) নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন কেষ্ট। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই তিনি পুরনো মেজাজে ফিরেছেন। রবিবার বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার আমনদীপ সিংয়ের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনুব্রত, যা রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনা সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি সিউড়িতে একটি বেহাল সেতুর প্রতিবাদে বিজেপির নেতা-কর্মীরা জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, সেই সময় বেশ কিছু পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিতে কালি লাগানো হয়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “সিউড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, তা খুবই নিন্দনীয়। আমরা দীর্ঘদিন বিরোধী রাজনীতি করেছি, জ্যোতিবাবুর আমলে, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আমলে। কিন্তু, কোনো মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কালি লাগাইনি। এটা আমাদের শিক্ষা না। আজ কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আছে, তাদের কোনো লিডারের মুখে আমরা কালি লাগাই না। এটা কোনো ভদ্রতা নয়।”
এরপরই অনুব্রত মণ্ডল বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিংকে সরাসরি নিশানা করেন। তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “বীরভূম জেলায় এই ধরনের কালচার ছিল না। এই এসপি আসার পর এই কালচারগুলো হয়েছে। আগে কোনো এসপি থাকাকালীন নোংরামির ঘটনা হত না।”
পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ তুলে অনুব্রত বলেন, “এই এসপি আসার পর তিনজন মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। দু’জন তৃণমূল নেতার মৃত্যু হয়েছে। সব কিছু হচ্ছে এই এসপির আমলে। যেখানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে কালি লাগানো হয়েছে, সেখান থেকে এসপি অফিস মাত্র হাত বিশেক দূরে। উনি কি ঘুমাচ্ছিলেন? ওঁর ডিআইবির রিপোর্ট নেই? খবর নেই? এটা মানা যায় নাকি?”
উল্লেখ্য, গত ২৭ থেকে ২৯ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূম সফরে গিয়েছিলেন। এই সফরের পরই অনুব্রত মণ্ডলকে তৃণমূলের বীরভূম জেলার কোর কমিটির আহ্বায়ক করা হয় এবং তাঁকে ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তাও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পদ ফিরে পাওয়ার পর ফের পুলিশের বিরুদ্ধে অনুব্রতর এই সরব মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল একটি প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করবে।