গাঁটের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা, যা বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা গেলেও যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। বর্তমানে বাড়িতে বেশি সময় কাটানো এবং হাঁটাচলা কম হওয়ার কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা আরও বেড়ে গেছে। চিকিৎসকের কাছে যাওয়া সবসময় সম্ভব না হওয়ায় অনেকেই এই ব্যথার কষ্ট সহ্য করেন। তবে ওষুধ ছাড়াই কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়ে এই ব্যথা কমানো সম্ভব।
চিকিৎসকরা সাধারণত ব্যথার জন্য পেইনকিলার খাওয়ার পরামর্শ দেন, কিন্তু এগুলো সাময়িক আরাম দিলেও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে পেট খারাপ বা অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই ওষুধকে শেষ উপায় হিসেবে রেখে কিছু প্রাকৃতিক পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে।
অলিভ অয়েল ও সৈন্ধব লবণের মালিশ
ঘরে থাকা কিছু সাধারণ জিনিস দিয়ে তৈরি মালিশ তেল গাঁটের ব্যথা কমাতে দারুণ কাজ করে। এর জন্য প্রয়োজন হবে অলিভ অয়েল ও সৈন্ধব লবণ। অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধের মতো কাজ করে। এর সঙ্গে সৈন্ধব লবণ মেশালে এর কার্যকারিতা আরও বাড়ে। সৈন্ধব লবণে ম্যাগনেশিয়াম, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার এবং জিঙ্কের মতো খনিজ পদার্থ থাকে, যা পেশীর ব্যথা কমাতে এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
এই তেল তৈরির পদ্ধতি:
২০০ মিলি লিটার জলের সাথে ২০ চামচ অলিভ অয়েল এবং ১০ চামচ সৈন্ধব লবণ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। প্রতিদিন এই মিশ্রণ দিয়ে ব্যথার জায়গায় ১৫ মিনিট মালিশ করলে পেশী শিথিল হয় এবং আরাম মেলে।
অন্যান্য কার্যকর ঘরোয়া উপায়
গরম সেঁক: ব্যথা নিরাময়ের জন্য গরম জলের সেঁক খুবই উপকারী। একটি পাত্রে গরম জল নিয়ে তাতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাঁটু ডুবিয়ে রাখতে পারেন, অথবা হট ওয়াটার ব্যাগও ব্যবহার করা যায়। দিনে দুই থেকে তিনবার এমন করলে ব্যথা কমতে পারে।
হলুদ ও বাদামের দুধ: দুই কাপ দুধের সাথে এক টেবিল চামচ গুঁড়ো করা বাদাম, আখরোট এবং সামান্য হলুদের গুঁড়ো মিশিয়ে ভালোভাবে ফোটান। মিশ্রণের পরিমাণ অর্ধেক হয়ে গেলে তা নামিয়ে নিন। টানা দুই মাস দিনে একবার এই দুধ পান করলে গাঁটের ব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।
আদা: আদা ব্যথা নিরাময়ে দারুণ কাজ করে। প্রতিদিন সকালে এক কাপ আদা চা পান করলে হাঁটুর ব্যথায় অনেকটা স্বস্তি মিলতে পারে।
এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে ওষুধ ছাড়াই গাঁটের ব্যথার যন্ত্রণা কমানো সম্ভব। তবে ব্যথা গুরুতর হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।