পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে আগামী কয়েকদিন ব্যাপক বৃষ্টিপাত, বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। একটি শক্তিশালী ঘূর্ণাবর্ত সাব-হিমালয়ান পশ্চিমবঙ্গ এবং সংলগ্ন অঞ্চলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯.৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় উত্তর ও দক্ষিণ উভয় বঙ্গেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যার জেরে একাধিক জেলায় জারি করা হয়েছে রেড এবং ইয়েলো অ্যালার্ট।
উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া: অতি বৃষ্টির সতর্কতা
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ১লা আগস্ট, শুক্রবার দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে ৭-১১ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত এবং ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে ২রা ও ৩রা আগস্ট, যখন আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে ২০ সেন্টিমিটারের বেশি বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। দার্জিলিং, কোচবিহার ও কালিম্পং-এও প্রবল বৃষ্টি হবে। এরপর ৪ঠা থেকে ৭ই আগস্ট পর্যন্ত দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুরে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলাকে আবহাওয়া মানচিত্রে “রেড অ্যালার্ট” (চূড়ান্ত সতর্কতা) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দক্ষিণবঙ্গের পূর্বাভাস: সপ্তাহান্তে ভিজবে একাধিক জেলা
হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১লা আগস্ট, শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও পুরুলিয়ায় ৭-২০ সেন্টিমিটার ভারী বৃষ্টি এবং বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ২রা ও ৩রা আগস্ট নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বজ্রঝড় সহ মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বহু জেলাকে “ইয়েলো অ্যালার্ট” (সতর্কতা) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে সপ্তাহান্তে এই জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
প্রভাব ও সতর্কতা: যা জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর
এই ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সম্ভাব্য প্রভাব এবং করণীয় সম্পর্কে আবহাওয়া দফতর কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা জারি করেছে:
১. জলমগ্নতা ও বন্যা: নিচু এলাকা এবং আন্ডারপাসগুলিতে জল জমে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
২. ভূমিধস: পাহাড়ি জেলাগুলিতে ভূমিধসের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
৩. ঘরবাড়ির ক্ষতি: কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
৪. পর্যটন: দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৫. নদীর জলস্তর: রাস্তা ও নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলতে বলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে এবং বিদ্যুতের খুঁটি বা গাছপালা থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।