টিসিএসে বিপুল কর্মী ছাঁটাই, প্রতিবাদে গর্জে উঠল শ্রমিক সংগঠন!

দেশের বৃহত্তম আইটি কোম্পানি টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টিসিএস)-এর ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবার সরব হয়েছে সিপিআইএম-এর শ্রমিক শাখা সেন্টার অফ ইন্ডিয়ান ট্রেড ইউনিয়নস (সিটু)। আগামী ৪ আগস্ট, সোমবার, কলকাতার রাজারহাটে টিসিএস কার্যালয়ের সামনে ঘেরাও সমাবেশের ডাক দিয়েছে তারা। দ্য হিন্দু-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেবল পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশজুড়ে টিসিএস-এর কার্যালয়গুলিতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।

সিটু-র এই কর্মসূচির বিশেষ তাৎপর্য হল, এতদিন মোটা বেতন পাওয়া আইটি কর্মীরা সাধারণত শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতেন না। কিন্তু এবার চাকরির নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়ে তারাও জীবিকা বাঁচাতে এই প্রতিবাদে সামিল হচ্ছেন। সিটু-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই প্রতিবাদের উদ্দেশ্য হলো আইটি ক্ষেত্রে চাকরি ও কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

শ্রম মন্ত্রকের তলব

এদিকে, ব্যাপক ছাঁটাই এবং নতুন নিয়োগ বিলম্বের বিষয়ে আলোচনা করতে শ্রম মন্ত্রকের অধীনস্থ চিফ লেবার কমিশনার শুক্রবার, ১ আগস্ট তারিখে টিসিএস-এর সিনিয়র নির্বাহীদের তলব করেছেন। আর্থিক বিষয়ক সংবাদপত্র ‘মানি কন্ট্রোল’ এই খবর প্রকাশ করেছে।

এনআইটিইএস-এর অভিযোগ

নেসেন্ট ইনফরমেশন টেকনোলজি এমপ্লয়িজ সিনেট (NITES) শ্রম মন্ত্রকে পাঠানো দুটি চিঠিতে টিসিএস-এর ছাঁটাইকে “অমানবিক”, “অনৈতিক” এবং “সম্পূর্ণ বেআইনি” বলে অভিহিত করেছে। NITES-এর সভাপতি হরপ্রীত সিং সালুজা চিঠিতে লিখেছেন, “ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের বেশিরভাগই ১০ থেকে ২০ বছর ধরে সংস্থায় কর্মরত মধ্য ও উচ্চ পর্যায়ের পেশাদার। কোনো পূর্ব ঘোষণা বা আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ছাড়াই রবিবার সন্ধ্যায় ইমেইল পাঠিয়ে ছাঁটাইয়ের কথা জানানো হয়েছে, যা ভারতীয় শ্রম আইনের পরিপন্থী।” তিনি এই ছাঁটাই অবিলম্বে বন্ধ করার এবং প্রভাবিত কর্মীদের পুনর্বহালের দাবি জানান।

টিসিএস-এর ব্যাখ্যা

অন্যদিকে, টিসিএস-এর সিইও কে. কীর্তিবাসন বলেছেন, এই ছাঁটাইয়ের কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) নয়। তিনি বলেন, “এটি হচ্ছে সেইসব ক্ষেত্রে যেখানে দক্ষতার অমিল রয়েছে বা যাদের উপযুক্তভাবে কাজে লাগানো যায়নি।” টিসিএস ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে তার কর্মীসংখ্যা ২ শতাংশ কমাতে পারে, যার ফলে প্রায় ১২,০০০ কর্মীর চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও শ্রম মন্ত্রকের সরাসরি ভূমিকা সীমিত, তবুও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তারা মনে করছেন, মন্ত্রক সম্ভবত খতিয়ে দেখবে যে ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে কোনো বেআইনি বা বৈষম্যমূলক আচরণ হয়েছে কিনা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy