আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে পুজো কমিটিগুলোর জন্য বড় অঙ্কের অনুদান ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবছর প্রতিটি পুজো কমিটি ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে অনুদান পাবে। গত বছর এই অনুদানের পরিমাণ ছিল ৮৫ হাজার টাকা।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় পুজো কমিটিগুলো অনেকটাই চমকে উঠেছে, কারণ অনেকেই আশা করেছিলেন অনুদান ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে মুখ্যমন্ত্রী সবার অনুমানকে ছাপিয়ে এই বিপুল পরিমাণ অনুদান ঘোষণা করেছেন।
অনুদান বৃদ্ধির ইতিহাস:
২০১৮ সাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপূজা কমিটিগুলোকে অনুদান দেওয়া শুরু করেন। প্রথম বছর ক্লাব প্রতি মাত্র ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে প্রতি বছরই অনুদানের পরিমাণ বেড়েছে, যা পুজো কমিটিগুলির জন্য একটি বড় আর্থিক সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হয়।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা:
অনুদান বৃদ্ধির পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন:
কার্নিভাল: আগামী ৫ই অক্টোবর কলকাতায় দুর্গাপূজা কার্নিভাল অনুষ্ঠিত হবে।
বিসর্জন: ২, ৩ এবং ৪ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া যাবে।
দমকলের চার্জ মওকুফ: পুজো কমিটিগুলোকে দমকলের জন্য কোনো চার্জ দিতে হবে না।
বিদ্যুৎ মাসুলে ছাড়: সিইএসই এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদকে পুজো কমিটিগুলোকে বিদ্যুতের মাসুলে ৮০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুদান বৃদ্ধির কারণ ও রাজনৈতিক জল্পনা:
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটিই সম্ভবত শেষ দুর্গাপূজার অনুদান ঘোষণা। এই ভোটকে মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী হিন্দু ভোট টানতে অনুদানের অঙ্ক আরও বাড়িয়েছেন বলে তাঁদের অনুমান।
জেলার পুজোর প্রশংসা ও উৎসবের গুরুত্ব:
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার পাশাপাশি জেলার পুজো কমিটিগুলোরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, জেলার পুজো গুলোও এখন থিমের দিকে ঝুঁকছে এবং তাদের সৃজনশীলতা প্রশংসার দাবি রাখে। মুখ্যমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে, এই উৎসবের সময় কেনাকাটা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ মানুষের হাতে টাকা আসে, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “ইউনেস্কো দুর্গাপূজাকে হেরিটেজের তকমা দিয়েছে। সেটাও ধরে রাখার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গের সবার।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাগুলি দুর্গাপূজার আয়োজনকে আরও সুগম করবে এবং উৎসবের আনন্দকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।