সুন্দর, উজ্জ্বল ত্বক কে না চায়? আর এর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি প্রয়োজন ত্বকের সঠিক যত্ন। ত্বকের যত্নে ফেসিয়ালের গুরুত্ব অপরিসীম। এটি কেবল ত্বককে সুন্দরই করে না, বরং প্রয়োজনীয় পুষ্টিও জোগায়। সাধারণত নারীদের মধ্যেই ফেসিয়াল করানোর প্রবণতা বেশি দেখা গেলেও, কতদিন অন্তর ফেসিয়াল করানো উচিত, সে সম্পর্কে অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। কেউ ঘন ঘন করান, আবার কেউবা অনিয়মিত। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য।
ত্বকের উজ্জ্বলতার চাবিকাঠি ফেসিয়াল:
আপনি যদি প্রতি ১৫ দিন অন্তর, অর্থাৎ মাসে দু’বার ফেসিয়াল করান, তাহলে আপনার ত্বক থাকবে পরিষ্কার ও সতেজ। এই পদ্ধতি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। ফেসিয়াল ত্বকের গভীরে গিয়ে পোরস পরিষ্কার করে, হোয়াইটহেডস এবং ব্ল্যাকহেডস-এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বক শুষ্কতা থেকে মুক্তি পায় এবং আর্দ্রতা বজায় থাকে। তবে, আপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল (সেনসেটিভ) হয়, তাহলে ফেসিয়াল করানোর আগে অবশ্যই একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ফেসিয়াল কেন প্রয়োজন?
ফেসিয়ালকে এক প্রকার স্কিনকেয়ার ট্রিটমেন্ট বলা যেতে পারে। সাধারণত আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই এটি সম্পন্ন হয়। এই ট্রিটমেন্টের মূল উদ্দেশ্য হলো ত্বককে স্বাস্থ্যকর ও সতেজ রাখা। এক্সফোলিয়েশনের মাধ্যমে ত্বকের উপরের স্তরের মৃত কোষগুলি সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর সুদিং মাস্ক এবং ক্রিমের সাহায্যে ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা হয়। ফেসিয়াল মাসাজ ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে, যা বয়সের ছাপ কমাতেও সহায়ক।
ফেসিয়াল করার পদ্ধতি (পার্লারে):
পার্লারে ফেসিয়ালের ধাপগুলি সাধারণত এমন হয়:
১. ক্লিনজিং: প্রথমে ক্লিনজার দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়।
২. স্ক্রাবিং ও এক্সফোলিয়েশন: স্ক্রাব ব্যবহার করে ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার করা হয়।
৩. মাস্ক প্রয়োগ (ট্যান অপসারণের জন্য): ট্যান দূর করার জন্য উপযুক্ত মাস্ক লাগানো হয়।
৪. ফেস মাসাজ: এরপর প্রায় ২০ মিনিট ধরে ত্বকে আরামদায়ক মাসাজ করা হয়। এই মাসাজের মাধ্যমে ত্বকের রিল্যাক্সেশন এবং ফেস কন্টোরিং-এর দিকেও নজর দেওয়া হয়।
৫. ফেস প্যাক: মাসাজের পর মুখ পরিষ্কার করে একটি ফেস প্যাক লাগানো হয়।
৬. ময়েশ্চারাইজিং ও সানস্ক্রিন: সবশেষে মুখ আবার পরিষ্কার করে ময়েশ্চারাইজার এবং সানস্ক্রিন প্রয়োগ করা হয়।
বাড়িতে ফেসিয়াল করার সহজ উপায়:
পার্লারে না গিয়েও আপনি চাইলে বাড়িতেই ফেসিয়াল করতে পারেন। এর জন্য কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করুন:
১. ফেসওয়াশ: প্রথমে একটি ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন।
২. স্ক্রাবিং: আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটি স্ক্রাব ব্যবহার করে ত্বক এক্সফোলিয়েট করুন।
৩. স্টিম: এবার মুখে ৫-৭ মিনিট স্টিম নিন। এটি পোরস খুলতে সাহায্য করবে।
৪. মাসাজ: অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে অন্তত ১০ মিনিট ধরে মুখ ও ঘাড় মাসাজ করুন।
৫. ফেসপ্যাক: মাসাজের পর মুখ পরিষ্কার করে আপনার পছন্দের ফেসপ্যাক লাগান। ১০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৬. টোনার ও ময়েশ্চারাইজার: সবশেষে টোনার ব্যবহার করুন এবং ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে আপনার ত্বকের যত্ন শেষ করুন।
নিয়মিত ফেসিয়াল ত্বকের স্বাস্থ্য এবং উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী। তবে ত্বকের ধরন অনুযায়ী সঠিক পণ্য ব্যবহার এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াটা জরুরি।