‘নিজের পছন্দের আসনে লড়ব’, ২৬-এর বিধানসভায় প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলীপ ঘোষের, খড়গপুরে ফিরতে মরিয়া প্রাক্তন সাংসদ!

রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিলই, এবার সেই জল্পনাই আরও জোরালো করে দিলেন বিজেপির দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষ। গতকাল রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করে ‘নবান্ন দখলের’ লড়াইয়ে পুরনো উদ্যমে ঝাঁপানোর কথা জানিয়ে আসার পরই আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি স্পষ্ট করে দিলেন, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতেও রাজি তিনি। তবে এবার আর দলের পছন্দ নয়, তিনি নিজের ‘পছন্দের আসনে’ই লড়তে চান বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা সরাসরি তাঁর পুরনো কেন্দ্র খড়্গপুরের দিকেই আঙুল তুলছে।

২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের স্মৃতি ও দিলীপের ক্ষোভ

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দলের চাপেই জেতা আসন মেদিনীপুর ছেড়ে তাঁকে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রের প্রার্থী হতে হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের কীর্তি আজাদের কাছে পরাজিত হন তিনি, যা নিয়ে দলের অন্দরেও নানা আলোচনা চলেছিল। এই পরাজয় দিলীপের মনে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

দিল্লিতে প্রকাশ্য ইচ্ছাপ্রকাশ: ‘খড়্গপুর আমার নিজের জায়গা’

আজ দিল্লিতে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশের সঙ্গে বৈঠক হয় দিলীপের। সেই বৈঠকেই দিলীপ জানিয়ে দিয়েছেন, দল চাইলে বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হতেও তৈরি তিনি। বৈঠক শেষে দিলীপ বলেন, “খড়্গপুর আমার নিজের জায়গা। যদি লড়তে হয় ওখানে লড়ব। দল ঠিক করবে কী করব। লোকসভায় দল বলল যাও বর্ধমান, লাভ ক্ষতি কী হল সবাই জানেন।” তাঁর এই মন্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, খড়্গপুর তাঁর কাছে আবেগ এবং পরিচিতির জায়গা, যেখানে তিনি স্বচ্ছন্দ বোধ করেন।

খড়গপুরের অতীত ও হিরণের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন

২০১৬ সালে দিলীপ ঘোষ খড়্গপুর সদর কেন্দ্র থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁকে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার পর অভিনেতা হিরণ বিজেপি-র টিকিটে খড়্গপুর সদর কেন্দ্রের বিধায়ক হন। যদিও সাংসদ হওয়ার পরও দিলীপ খড়্গপুরের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিয়মিত যুক্ত থাকেন। তবে বিধায়ক হিরণের সঙ্গে দিলীপের সংঘাত বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে।

এখন প্রশ্ন উঠছে, যদি দিলীপ ঘোষের মতো জনপ্রিয় মুখকে জিতিয়ে আনতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা তাঁর প্রস্তাব মেনে নেয়, তাহলে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে খড়্গপুরের বর্তমান বিধায়ক হিরণের কপাল পুড়তে পারে। শেষ পর্যন্ত বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিলীপের এই মতকে কতটা অগ্রাধিকার দেয়, এবং রাজ্য বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ সমীকরণ কোন দিকে মোড় নেয়, এসব কিছুর উপরেই গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে। এই মুহূর্তে দিলীপের এই মন্তব্য রাজ্য বিজেপির অন্দরে নতুন করে আলোচনা ও জল্পনার জন্ম দিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy