অবিরাম বর্ষণে সৃষ্ট জমা জলের প্রবল তোড়ে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার-কামারপুর সড়কের ওপর একটি অস্থায়ী সেতু সম্পূর্ণভাবে ভেসে গেছে। এর ফলে ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ ব্যাহত হয়েছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বিঘের পর বিঘে জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে, এবং জলের তীব্র গতি আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, বৃষ্টি চলতে থাকলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
বৃষ্টির তাণ্ডব ও দুর্বল সেতুর পরিণতি
পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে গত কয়েক দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাত হয়েই চলেছে। এই বৃষ্টির জমা জলে নারায়নপুর এলাকায় বিঘের পর বিঘে কৃষি জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এই বিপুল পরিমাণ জলরাশির তোড়েই ভাতার-কামারপাড়া রাস্তার ওপর নির্মিত অস্থায়ী সেতুটি ভেঙে যায়। এখন ভাঙা সেতুর উপর দিয়েই প্রবল বেগে জল বইছে, যা রাস্তাটিকে কার্যত অচল করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা কয়েক দিন ধরেই আশঙ্কা প্রকাশ করছিলেন, কারণ তাঁদের মতে, সেতুটি যথেষ্ট দুর্বল ছিল।
দৈনন্দিন জীবন ও পরিষেবা ব্যাহত
সেতু ভেঙে যাওয়ার কারণে ভাতার-কামারপাড়া রাস্তায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে নিত্যযাত্রীরা প্রতিদিন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সময়মতো কর্মস্থলে পৌঁছতে পারছেন না বহু মানুষ। এর সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবায়। নারায়নপুর সাব-সেন্টারে আশা কর্মীরা সময়মতো পৌঁছতে না পারায় মা ও শিশুর টিকাকরণ প্রক্রিয়া বেশ কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
আশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতিশ্রুতির অভাব
স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ভাতার-কামারপাড়া রাস্তার ওপর নারায়নপুরে নির্মিত এই অস্থায়ী সেতুটি গত বছরও একই রকমভাবে জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছিল। সেই সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থায়ীভাবে একটি নতুন সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়িত হয়নি, যার ফলস্বরূপ কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে আবারও একই দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তাটি এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে।
ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্ক
এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সেতু ভেঙে যাওয়ায় স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রী, সকলেই সমস্যার মুখে পড়েছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে কিভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাবে, তা নিয়েও সকলে গভীরভাবে চিন্তিত। দ্রুত একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ, যাতে এই বর্ষাকালে বারবার একই দুর্ভোগের সম্মুখীন হতে না হয়।