নদীয়ার চাপড়া থানা এলাকায় এক তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা নেত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চাপড়া থানায় কর্মরত এক ভিলেজ পুলিশ, অমিত পাল-সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় এক বড় প্রশ্নচিহ্ন এঁকে দিয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত ৪ জুলাই। স্থানীয় এক মহিলা তৃণমূল নেত্রী রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় অমিত পাল ও তার কয়েকজন সঙ্গী মদ্যপানের আসর বসিয়েছিলেন। মদ্যপ অবস্থাতেই অমিত পাল ওই তৃণমূল নেত্রীর হাত ধরে টানাটানি করেন এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তৃণমূল নেত্রীর দাবি অনুযায়ী, কোনোমতে সেখান থেকে পালিয়ে তিনি বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, ভিলেজ পুলিশ অমিত পাল তাঁর পিছু ধাওয়া করে বাড়িতে গিয়ে দরজায় প্রবলভাবে ধাক্কাধাক্কি ও লাথি মারেন। তিনি ঘর থেকে মহিলাকে বাইরে বের করার চেষ্টা করেন বলেও অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, অমিতের এই জোরপূর্বক আচরণের কারণে ওই মহিলা চাপড়া থানায় খবর দেন। দ্রুত চাপড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও, পুলিশ আসার আগেই অমিত ও তার সঙ্গীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপরই ওই মহিলা ভিলেজ পুলিশ অমিত পালের বিরুদ্ধে চাপড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে চাপড়া থানার পুলিশ মঙ্গলবার রাতে মূল অভিযুক্ত অমিত পাল-সহ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করে। আজ, বুধবার ধৃতদের কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে তোলা হয়। একই সাথে গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শুরু করেছে চাপড়া থানার পুলিশ।
কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের ডিএসপি শিল্পী পাল এই বিষয়ে জানান, “মূল অভিযুক্ত অমিত পাল-সহ আরও তিনজন গ্রেফতার হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে এবং জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।”
একজন ভিলেজ পুলিশের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশি ক্ষমতার অপব্যবহারের এই ঘটনায় জনরোষ বাড়ছে এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।