বর্তমান সময়ে ইয়ারফোন বা হেডফোন ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবন প্রায় অচল। ঘরের বাইরে বেরোলে, বাসে-ট্রেনে যাতায়াতের সময় অথবা ঘরে বসে গান শোনা, সিনেমা দেখা কিংবা ফোনে কথা বলার জন্য – ইয়ারফোন আমাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এই অপরিহার্য গ্যাজেটটি কতটা সুরক্ষিত, সে কথা কি আমরা কখনও ভেবে দেখেছি? আপাতদৃষ্টিতে পরিষ্কার মনে হলেও, আপনার প্রিয় ইয়ারফোনটি হতে পারে কোটি কোটি জীবাণুর আখড়া!
সম্প্রতি আমেরিকার হুইটার হাসপাতালের একদল চিকিৎসকের চালানো এক গবেষণায় উঠে এসেছে চোখ কপালে তোলার মতো তথ্য। তাদের পরীক্ষা অনুযায়ী, বাথরুম বা রান্নাঘরের বেসিনের তুলনায় আপনার ইয়ারফোন বা হেডফোনে প্রায় ৬ গুণ বেশি জীবাণু থাকে! শুধু তাই নয়, সবজি কাটার জন্য ব্যবহৃত চপিংবোর্ডের চেয়েও প্রায় ২ হাজার ৭০৮ গুণ বেশি জীবাণু এই ছোট ডিভাইসটিতে বাসা বাঁধে। প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই জীবাণুগুলো আসে কোথা থেকে?
অ্যাপল কোম্পানির একটি সমীক্ষায় এর কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তারা দেখিয়েছে যে, তেল, সাবান, শ্যাম্পু, সুগন্ধি থেকে শুরু করে খাবারের ক্ষুদ্র কণা পর্যন্ত ইয়ারফোনে লেগে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে জমা হতে থাকলে এগুলোর পচন ধরে এবং জীবাণুর একটি আদর্শ বাসস্থান তৈরি হয়।
জীবাণুর বাসা ধ্বংস করবেন কিভাবে?
এই অপরিচ্ছন্ন ইয়ারফোন থেকে আপনার কানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, যার ফলে কান পেকে যাওয়া, জ্বালা-যন্ত্রণা, কানের ভেতরে ঘা হওয়া এমনকি কানে কম শোনার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত ইয়ারফোন ও হেডফোন পরিষ্কার রাখা অত্যাবশ্যক।
পরিষ্কার করার পদ্ধতিও খুব সহজ:
ইয়ারফোনে যদি স্পঞ্জের আবরণ থাকে, তাহলে সেগুলোকে খুলে জল দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন এবং সম্পূর্ণ শুকিয়ে নিন।
ইয়ারফোনের বাকি অংশ এবং হেডফোন পরিষ্কার করার জন্য হ্যান্ডস্যানিটাইজারে ভেজানো একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতো করে মুছে নিন।
তবে মনে রাখবেন, ভেজা অবস্থায় কখনোই ইয়ারফোন বা হেডফোন ব্যবহার করা উচিত নয়। সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পরেই এটি ব্যবহার করুন।
আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহৃত এই ছোট্ট গ্যাজেটটির প্রতি আমরা প্রায়শই উদাসীন থাকি। কিন্তু এর সঠিক পরিচর্যা না করলে এটিই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই, আজ থেকেই আপনার ইয়ারফোন ও হেডফোন নিয়মিত পরিষ্কার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং সুরক্ষিত থাকুন!