জিহ্বা কেবল স্বাদের অনুভূতিই বহন করে না, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের এক গুরুত্বপূর্ণ সূচকও বটে। চিকিৎসকরা প্রায়শই রোগীর জিহ্বা দেখেই তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা পেয়ে যান। তাই জিহ্বার রঙ, গঠন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আমাদের শরীরের ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু বলে দেয়। নিয়মিত জিহ্বার যত্ন না নিলে সেখানে খাবার জমে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হয়, যা নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। মৃত কোষ, ব্যাকটেরিয়া এবং খাবারের কণা ভালোভাবে পরিষ্কার না হওয়ার ফলেই জিহ্বায় কালো দাগ দেখা দিতে পারে। এই কালো দাগ দূর করার জন্য কিছু সহজ ঘরোয়া উপায় রয়েছে, যা আপনার জিহ্বাকে সুস্থ ও পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে।
জিহ্বার কালো দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়:
নরম টুথব্রাশের ব্যবহার:
প্রতিদিন অন্তত দুইবার নরম টুথব্রাশ দিয়ে হালকাভাবে জিহ্বা ঘষুন। এতে জিহ্বায় জমে থাকা মৃত কোষ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর হবে। এছাড়াও, প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করলে মুখের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
আনারস খান:
আনারস কেবল একটি উপকারী ফলই নয়, এটি জিহ্বার কালো দাগ দূর করতেও দারুণ কাজ করে। আনারসে থাকে ‘ব্রোমেলিন’ নামক একটি উপকারী উপাদান, যা জিহ্বার কালো দাগ এবং মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। নিয়মিত আনারস খেলে আপনি নিজেই এর সুফল দেখতে পাবেন।
তাজা অ্যালোভেরা জেল:
অ্যালোভেরা জেল শুধু ত্বক ও চুলের জন্যই উপকারী নয়, এটি কোলাজেন কাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে দাগ দ্রুত নিরাময় করতেও সাহায্য করে। তাজা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে জিহ্বার কালো দাগ ধীরে ধীরে উঠে যাবে। এর পাশাপাশি, নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস পান করাও ভেতর থেকে শরীরকে পরিষ্কার রাখতে সহায়ক।
লবঙ্গ ও দারুচিনি:
জিহ্বার কালো দাগ দূর করতে লবঙ্গ ও দারুচিনি দারুণ কার্যকরী।
ব্যবহার বিধি: চারটি লবঙ্গ এবং দুই টুকরো দারুচিনি নিয়ে এক গ্লাস জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এবার সেই জল দিয়ে কুলকুচি করুন। প্রতিদিন এভাবে দুইবার করলে জিহ্বার কালো দাগ দূর হবে।
নিমপাতার ব্যবহার:
নিম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং প্রাকৃতিকভাবে দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার বিধি: কয়েকটি নিমপাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে এক কাপ জলে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন। সেই জল ঠান্ডা করে তা দিয়ে জিহ্বা ধুয়ে নিন। এভাবে দিনে দুইবার করলে দ্রুতই উপকার পাবেন।
জিহ্বার স্বাস্থ্যকে অবহেলা করবেন না। নিয়মিত যত্ন এবং এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো অনুসরণ করে আপনি আপনার জিহ্বাকে সুস্থ ও পরিষ্কার রাখতে পারবেন, যা সামগ্রিক সুস্থতারই একটি অংশ। যদি কালো দাগ দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।