পর্দার ‘খলনায়িকা’র বিস্ফোরক আর্তি: “আমার বিকিনি ছবি ডিলিট করুন, কাজ হারাচ্ছি!” স্টারডামের আড়ালে নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়ের অন্য লড়াই
কলকাতা/মুম্বাই, ১৯ জুন ২০২৫: বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ, যিনি তার ধারালো অভিনয় দিয়ে ‘খলনায়িকা’ হিসেবে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন, সেই নন্দিনী চট্টোপাধ্যায় এবার এক ভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি। হিন্দি সিরিয়ালে কাজের সুযোগ পেয়ে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমানো এই অভিনেত্রী সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এক মর্মস্পর্শী ভিডিও বার্তায় তার স্ট্রাগলের কথা তুলে ধরেছেন। আর সেখানেই তিনি কিছু সংবাদমাধ্যমের কাছে আকুল আবেদন জানিয়েছেন, তার পুরোনো বিকিনি পরা ছবিগুলো যেন ডিলিট করে দেওয়া হয়, কারণ সেই ছবিগুলোর জন্য নাকি তিনি কাজ হারাচ্ছেন!
ভিডিও বার্তায় নন্দিনী নিজেকে একজন ‘স্ট্রাগলিং অভিনেত্রী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যিনি প্রতি মুহূর্তে বেঁচে থাকার জন্য লড়ছেন। তার এই অকপট স্বীকারোক্তি ইন্ডাস্ট্রির গ্ল্যামারের আড়ালে থাকা কঠিন বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। দর্শকদের ভালোবাসার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, তাদেরই ভালোবাসায় তিনি ধীরে ধীরে পরিচিতি, সম্মান ও জায়গা করে নিচ্ছেন।
নন্দিনী জানান, কোনো ‘গডফাদার’ বা পৃষ্ঠপোষক না থাকা সত্ত্বেও তিনি অভিনয় জগতে আসতে পেরেছেন। একজন ভালো অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার দুঃসাহসিক স্বপ্ন নিয়েই তিনি কলকাতা ছেড়ে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছেন। এই পর্যন্ত তার যাত্রাটা যে সহজ ছিল না, তা তার কথাতেই স্পষ্ট।
কিন্তু এর পরেই নন্দিনীর কণ্ঠে হতাশার সুর শোনা যায়। তিনি কিছু নির্দিষ্ট সংবাদমাধ্যমের দিকে আঙুল তুলেছেন, যারা তার বিকিনি পরা ছবিগুলো নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে তাকে ‘বিপদে’ ফেলেছেন। নন্দিনীর দাবি, “অনুরোধ করছি, দয়া করুন আমার ওপর। যাদের প্ল্যাটফর্মে আমার বিকিনি পরা ছবি আছে, তারা ডিলিট করে দিন প্লিজ। আমি অনেক কাজ হারিয়েছি সেই ছবিগুলোর জন্য। একটু মানবিকতা রাখুন মনের মধ্যে।”
প্রসঙ্গত, দু’বছর আগে নন্দিনী চট্টোপাধ্যায়ের বিকিনি পরা ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন ফেলেছিল। তিনি গোয়ায় বেড়াতে গিয়ে সেই সময় বিকিনিতে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করেন, যা নিয়ে প্রচুর চর্চা হয়। এই ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবিগুলোই এখন তার কেরিয়ারে বাধা সৃষ্টি করছে বলে তিনি মনে করছেন।
পর্দার ‘কূটনীতি-ষড়যন্ত্রকারী’ নন্দিনী ব্যক্তিগত জীবনে এক মানবিক সংকটের মুখে দাঁড়িয়েছেন। তারকাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং তাদের কাজের সুযোগের ওপর সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাব কতটা গুরুতর হতে পারে, নন্দিনীর এই আবেদন যেন তারই এক করুণ চিত্র তুলে ধরল। এখন দেখার, তার এই আকুল আর্তি সংবাদমাধ্যম এবং সমাজের কাছে কতটা পৌঁছায়।
