জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিপাশা বসুর প্রসব-পরবর্তী ওজন বৃদ্ধি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কদর্য মন্তব্য ও ট্রোলের বিরুদ্ধে এবার রুখে দাঁড়িয়েছেন তিনি নিজেই। এক ভাইরাল ভিডিওকে কেন্দ্র করে ওঠা সমালোচনার জবাব দিয়েছেন বিপাশা, এবং তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন স্বামী করণ সিং গ্রোভার। এটি কেবল বিপাশার ব্যক্তিগত লড়াই নয়, মাতৃত্বের পর মহিলাদের প্রতি সমাজের অযৌক্তিক প্রত্যাশার বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।
শ্বেতা বিজয় নায়ারের সাহসী পদক্ষেপ, বিপাশার সংহতি
প্রাক্তন মিস ইন্ডিয়া এবং বিউটি ইনফ্লুয়েন্সার শ্বেতা বিজয় নায়ার সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে মহিলাদের ওপর চাপানো ‘অযৌক্তিক প্রত্যাশা’ নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। তাঁর রিলে তিনি মাতৃত্বের আবেগ এবং শারীরিক পরিবর্তনের বাস্তবতাকে তুলে ধরেন। শ্বেতা জোর দিয়ে বলেন যে, কীভাবে মহিলাদের একাধিক ভূমিকা পালন করতে হয় এবং একই সাথে তাদের চেহারার খুঁতগুলো নিয়েও সমাজের কুরুচিকর মন্তব্য চলে। শ্বেতার এই পোস্টের কমেন্ট সেকশনেই বিপাশা তাঁর শক্তিশালী মতামত তুলে ধরেছেন।
বিপাশা তাঁর মন্তব্যে লেখেন, “ধন্যবাদ তোমার স্পষ্ট কথাগুলোর জন্য। আশা করি মানবজাতি এত অগভীর এবং এত নীচ থাকবে না… এবং তারা প্রতিদিন মহিলাদের লক্ষ লক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য উৎসাহিত ও প্রশংসা করবে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি একজন আত্মবিশ্বসী মহিলা, আমার একটা যত্নবান ও সহযোগী পরিবার আছে। মিম এবং ট্রোল আমাকে সংজ্ঞায়িত করে না। তবে এগুলো মহিলাদের প্রতি সমাজের যে দৃষ্টিভঙ্গি, তা তুলে ধরে। আমার জায়গায় অন্য কোনো মহিলা হলে হয়তো এই ধরনের মন্তব্য দেখে মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারত। যাই হোক, আমাদের সকলের কণ্ঠ যদি এভাবেই শক্তিশালী থাকে এবং মহিলারা যদি মহিলাদের এভাবেই সমর্থন করে, তাহলে নারীরা আরও উপরে উঠবে। আমরা অদম্য।”
করন সিং গ্রোভারের হৃদয়গ্রাহী বার্তা: নারী শক্তির জয়গান
বিপাশার স্বামী, অভিনেতা করণ সিং গ্রোভারও স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন এক হৃদয়গ্রাহী বার্তা দিয়ে। তিনি মন্তব্যে লিখেছেন, “আমাদের পরিচিত এবং ভালোবাসার সমস্ত মহিলাদের একটি আসনে বসানো উচিত এবং তাঁদের পুজো করা উচিত। তাঁরাই হলেন সেই দেবী যাদের আমাদের পুজো করা উচিত। আমি বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর/উৎস একটি নারী শক্তি। জীবন নামক সুন্দর জিনিসটি অন্য কিছু তৈরি করতে পারে না।” তিনি বিপাশাকে ‘এত অসাধারণ’ হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন।
করণ ও বিপাশা ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর তাঁদের প্রথম সন্তান, কন্যা দেবীর জন্ম দেন। জন্মলগ্নে দেবীর হার্টে একটি ছোট ছিদ্র থাকলেও, সফল ওপেন হার্ট সার্জারির পর এখন একরত্তি দেবী পুরোপুরি সুস্থ আছে। এই ঘটনা বিপাশার ব্যক্তিগত জীবন এবং মাতৃত্বের যাত্রার প্রতি তাঁর অটুট আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচকতারই প্রতিফলন। এই বার্তা সমাজের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশ করে – নারীর প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতা যেন কোনো ট্রোল বা মিমের নিচে চাপা না পড়ে।