স্মার্টফোন এখন আমাদের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী। এটি শুধু যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, এটি এখন মানিব্যাগের বিকল্পও। তবে এই অত্যাবশ্যকীয় ডিভাইসটিকে সচল রাখতে প্রয়োজন সময়মতো চার্জ করা। অনেকে দিনে একবার আবার অনেকে একাধিকবার ফোন চার্জ করেন, যা নির্ভর করে ব্যবহারের ওপর। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, একবার ফোন চার্জ করতে আপনার কতটুকু বিদ্যুৎ খরচ হয়?
আশ্চর্যের বিষয় হলো, ফোন চার্জ করতে খুব কম পরিমাণে বিদ্যুৎ খরচ হয়। চলুন, মোবাইলে চার্জ দিতে আপনার মোট কত টাকা খরচ হয়, তার একটি সহজ হিসাব জেনে নেওয়া যাক।
বিদ্যুতের খরচ কত?
সাধারণত একটি ফোনের চার্জারের শক্তি ৫ থেকে ২০ ওয়াটের মধ্যে হয়। একটি সাধারণ চার্জার প্রায় ৫ ওয়াটের হয়, আর দ্রুত চার্জারগুলো ১৮-২০ ওয়াট বা তার বেশি হতে পারে। ফোনটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে প্রায় ১ থেকে ২ ঘণ্টা সময় লাগে, যা ফোন মডেল এবং চার্জারের ওপর নির্ভর করে।
ধরা যাক, আপনি একটি ১০ ওয়াটের চার্জার দিয়ে ২ ঘণ্টায় আপনার ফোনটি চার্জ করেন। তাহলে বিদ্যুতের খরচ হবে:
বিদ্যুৎ খরচ = ১০ ওয়াট × ২ ঘণ্টা = ২০ ওয়াট-ঘণ্টা (Wh)
ইউনিটে রূপান্তর: ২০ ওয়াট-ঘণ্টা = ০.০২ ইউনিট (যেহেতু ১০০০ ওয়াট-ঘণ্টা = ১ ইউনিট)
এর মানে হলো, ফোনটি একবার চার্জ করতে মাত্র ০.০২ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়।
বার্ষিক খরচ ও সাশ্রয়ের টিপস:
যদি আপনি প্রতিদিন একবার ফোন চার্জ করেন, তাহলে বছরে খরচ হয় ০.০২ ইউনিট × ৩৬৫ দিন = প্রায় ৭ থেকে ১০ ইউনিট বিদ্যুৎ।
এখন বিদ্যুতের খরচ যদি প্রতি ইউনিট ৭ টাকা ৫০ পয়সা হয়, তাহলে বছরে চার্জিং খরচ দাঁড়াবে: ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।
তবে, এই খরচ আপনার এলাকার বর্তমান প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের হারের ওপর নির্ভর করে কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখবেন: আপনার ফোন যখন চার্জে থাকে কিন্তু চার্জারটি প্লাগ ইন করা থাকে, তখনো কিছু বিদ্যুৎ খরচ হয়। আপনার বিদ্যুৎ বিল যাতে না বাড়ে, তার জন্য ফোন চার্জ করার পর চার্জারটি খুলে রাখুন। এছাড়াও, পুরোনো চার্জারের পরিবর্তে নতুন এবং আরও দক্ষ চার্জার ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ খরচ অনেক সাশ্রয়ী হবে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, স্মার্টফোন চার্জ করা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য হলেও এর বিদ্যুৎ খরচ অত্যন্ত নগণ্য। তাই ফোন চার্জের কারণে আপনার বিদ্যুৎ বিলের ওপর খুব বেশি প্রভাব পড়বে না।